আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ২০ জুন: গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তপ্ত বীরভূমের মাড়গ্রাম। ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিককে স্মারকলিপি জমা দিল বিশ্বহিন্দু পরিষদ। তারা মাড়গ্রাম থানার ওসির পদত্যাগ দাবি করে। পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার আশ্বাস দিলে ফিরে যান আন্দোলনকারীরা।
ঘটনার সূত্রপাত ১৭ জুন পবিত্র কুরবানির দিন। স্থানীয় বাসিন্দা এবং বিশ্বহিন্দু পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন মাড়গ্রামের দুই যুবক মোটর বাইকে চড়ে কুরবানি দেওয়া পশুর দেহাংশের কিছু অংশ ল-পাড়া, দাসপাড়া মন্দির ও শ্মশানের সামনে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ। তাদের মধ্যে একজনকে স্থানীয় বাসিন্দারা ধরে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এইনিয়ে পরের দিন থেকে এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। রাস্তায় পেয়ে মারধর শুরু হয় এক গোষ্ঠীর লোকজনদের। এমনকি তাদের থানায় অভিযোগ জানাতেও যেতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। গ্রামে তাদের কার্যত গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ।
মাড়গ্রাম থানার ওসি মহম্মদ মিকাইল মিঞা পক্ষপাতিত্ব করছেন বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। লাল মহম্মদ শেখ নামে এক গ্রামবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ এক মহিলা সহ নয় জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে ৩০৭ ধারায় খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাদের রামপুরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতদের পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
ধৃতদের আইনজীবী উৎপল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “লাল মহম্মদ শেখ অভিযোগ করেন, কুরবানির দিন তার দুই ভাই মোটর বাইক নিয়ে যাচ্ছিল। সেই সময় ল-পাড়ার বাসিন্দারা তাদের মারধর করে। মোটর বাইক ভাঙ্গচুর করে। এই অভিযোগে ধৃতদের পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজত দেন বিচারক। তবে ওই অভিযোগ সম্পূর্ণ অসত্য”।
বিশ্বহিন্দু পরিষদের উত্তর বীরভূম জেলা সম্পাদক শান্তনু হাজরা বলেন, “কুরবানির দিন দুই যুবক আমাদের কয়েকটি মন্দির অপবিত্র করে। তাদের একজনকে ধরে এলাকার মানুষ পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিল। পুলিশ অভিযুক্তকে ছেড়ে দিয়ে আমাদের দশজনকে গ্রেফতার করে খুনের চেষ্টার মামলা দিয়ে আদালতে তুলে হেফাজতে নেয়। পুলিশের এরই পক্ষপাতিত্বের প্রতিবাদে আমাদের আন্দোলন”।
এদিকে ঘটনার জেরে এলাকায় নেট পরিষেবা সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। তারপরও বেশ কিছু এলাকায় এক মৃত যুবকের ছবি ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। গুজবে কান না দেওয়ার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে আবেদন করা হচ্ছে।