আমাদের ভারত, ২০ জুন: ২০২৪ সালের নিট পরীক্ষায় অসংগতি এবং ইউজিসি নেট পরীক্ষা বাতিল হওয়াকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে তোলপাড়ের মধ্যে মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। তিনি জানিয়েছেন, উচ্চস্তরের কমিটি তৈরি করে এই বিষয়ে তদন্ত করা হবে। সরকারের কাছে পড়ুয়াদের স্বার্থই অগ্রাধিকার পাবে বলে স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রী।
সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি বলেছেন, “আমি সকলকে আশ্বস্ত করতে চাই, সরকার পড়ুয়ারদের স্বার্থ রক্ষায় দায়বদ্ধ। এক্ষেত্রে কোনো রকম আপোষ করা হবে না। নিটে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে প্রকাশ্যে এসেছে। বিহার থেকে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে স্বীকার করেছে পরীক্ষার আগের দিন সে প্রশ্ন পেয়ে গিয়েছিল। তা মুখস্ত করে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল। এই প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, “নিট পরীক্ষার ক্ষেত্রে বলতে পারি বিহার সরকারের সঙ্গে লাগাতার যোগাযোগ রেখে চলেছি আমরা। আমাদের বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠাবে পাটনা পুলিশ। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী অসঙ্গতি নির্দিষ্ট অঞ্চলে সীমাবদ্ধ। একথা বলতে পারি জোরালো প্রমাণ পেলে কোনো অপরাধি নিষ্কৃতি পাবে না। পড়ুয়াদেরই ভবিষ্যৎ আমাদের অগ্রাধিকার।”
জাতীয় টেস্টিং এজেন্সি বা এনটিএতে সমস্যা রয়েছে বলেও স্বীকার করেছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ভুল সংশোধন এবং উন্নত পরিষেবার জন্য কমিটি গঠন করা হবে। আর সেই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী এনটিএর পরিকাঠামো, পরীক্ষা আয়োজনের পদ্ধতি শুধরে নেওয়া হবে। কেন্দ্রের প্রতি আস্থা রাখতে অনুরোধ করেছেন ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা মন্ত্রী। এনটি’এর কাঠামোগত ও প্রক্রিয়াগত সংশোধনে যেটা প্রয়োজন সেবিষয়ে সরকার পদক্ষেপ করবে বলে জানিয়েছেন ধর্মেন্দ্র প্রধান। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, আইন, শিক্ষামনস্তত্ত্ব বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে এসে কমিটি তৈরি হবে। সেই কমিটির সুপারিস অনুযায়ী এনটিএর সংশোধন করা হবে বলে জানান তিনি।
শিক্ষা মন্ত্রীর কথায়, “নিট দুর্নীতি প্রমাণিত হলে দোষীরা শাস্তি পাবে। নেট এর ক্ষেত্রেও কাউকে কোনো রেয়াত করা হবে না। আমি তার গ্যারান্টি দিচ্ছি। পরীক্ষা পদ্ধতির উপর বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব আমার।
নেট পরীক্ষার একদিন পরে বাতিল করে দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, “পরীক্ষার পরের দিন বিকেল তিনটে নাগাদ জানতে পারা যায় ডার্ক নেটে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে গিয়েছিল পরীক্ষার আগেই। মূল প্রশ্নপত্রের সঙ্গে তা মিলিয়ে দেখা হয় এবং ফাঁস হওয়া প্রশ্ন সঙ্গে তা মিলে যায়। এরপরই আমরা পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। টেলিগ্রামের মত অ্যাপগুলোর উপর নজরদারি চালানো কঠিন। তবে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের সঙ্গে আমরা আপস করব না।”
শিক্ষা মন্ত্রী বলেন,” দুটি বিষয় অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ জড়িয়ে রয়েছে। আমি শিক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্বে রয়েছি যা কিছু গোলমাল তার নৈতিক দায়িত্ব নিচ্ছি আমি। কিন্তু আমার অনুরোধ এটা নিয়ে কেউ রাজনীতি করবেন না। আমিও রাজনীতি করা থেকে বিরত থাকছি।গণতন্ত্রের উপর আস্থা রাখছি। দায়িত্ব নিয়ে বলছি দুধ কা দুধ পানি কা পানি হয়ে যাবে। “