পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২২ জানুয়ারি: দল থেকে বহিষ্কৃত বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে দলে ফিরিয়ে নিল ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেস। রবিবার ডেবরায় দলের বর্ধিত সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় মন্ত্রী মানস ভুঁইঞা, জেলা তৃণমূল সভাপতি আশিস হুদাইত উপস্থিত ছিলেন।
জেলা সভাপতি বলেন, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে যাঁরা দলের ভাবনাকে মান্যতা দেননি, তাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছিল। তাঁরা ক্ষমা চেয়ে দলে ফেরার জন্য আবেদন করেছেন। এরমধ্যে জেলাপরিষদের প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ কণিকা মাণ্ডিও আছেন। ডেবরা ও দাসপুর-১ ব্লকের এরকম ১৪ জনকে এদিন দলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ওই কর্মাধ্যক্ষ এবার নির্দল প্রার্থী হয়ে পঞ্চায়েত ভোটে লড়াই করে পরাজিত হন। তিনি বলেন, ফিরতে চেয়ে দলের কাছে আবেদন করেছিলাম।
জেলা সভাপতি বলেন, আগামী একবছর ওঁরা দলের কাজে কতটা যুক্ত হচ্ছেন তা দেখা হবে। এখনও যাঁরা বহিষ্কৃত আছেন, তাঁরা যদি ভুল স্বীকার করেন ও দলে ফিরে আসার জন্য আবেদন করেন, তাহলে বিবেচনা করা হবে। বিভিন্ন বক্তারা বিভিন্নভাবে রাজনৈতিক পর্যালোচনা করেন। সেই সঙ্গে আগামী দিনে মন্ত্রী মানস ভুঁইঞা গুরুত্বপূর্ণ কিছু কর্মসূচি ঘোষণা করেন। গত বিধানসভা নির্বাচনে যে সমস্ত ব্লকের বুথগুলো ভোটের নিরিখে পিছিয়ে গিয়েছিল, পায়ে হেঁটে, সাইকেলে করে সেই বুথগুলিতে জনপ্রতিনিধি এবং নেতৃত্বদেরকে পৌঁছাতে হবে, মানুষের সঙ্গে কাজ করতে হবে, মানুষের সঙ্গে কথা বলতে হবে। যদি ডিএম, এসপি, আজ মাদুরে বসে মানুষের কথা শুনতে পারেন, তবে আমরা কেন পারব না? গ্রামে কোনো মোটর সাইকেল, চারচাকা এবং মাতব্বরি দাদাগিরি এইসব চলবে না। আমাদের নেত্রী মমতা ব্যানার্জি নেতা অভিষেক ব্যানার্জি বার্তা দিয়েছেন, মানুষের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক তৈরি করতে হবে।
আজ যখন ১০০ দিনের কাজের টাকা কেন্দ্রের বিজেপি সরকার দিচ্ছে না, গরিব মানুষ আবাস ক্লাসের টাকা যখন পাচ্ছে না, এখন বাংলার মাটিতে তারা ধর্মীয় মেরুকরণ তৈরি করতে চাইছে, এই কথাগুলো মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে। অযোধ্যার মন্দিরে রামলালা সম্মানের সঙ্গে পূজিত হোক, কিন্তু বাংলার প্রতিটি মানুষের অন্তরে মমতা ব্যানার্জি উন্নয়নের প্রতীক হয়ে রয়েছেন। তিনি কর্মীদের সতর্ক করে বলেন, বিজেপি চক্রান্ত করছে, বাংলার মাটিতে একটা অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করার। আমরা যারা মমতা ব্যানার্জির সৈনিক, আমরা যারা কর্মী, বহু চক্রান্তকে আমরা ব্যর্থ করেছি। বিজেপির বহু রাজনৈতিক পরিকল্পনা আমরা প্রতিহত করতে পেরেছি। আগামী দিনের সব রকম চক্রান্তকে ব্যর্থ করে আমরা এগোতে পারবো, আমাদের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা ব্যানার্জি এবং অভিষেক ব্যানার্জির নেতৃত্বে।
অঞ্চল বুথের বিভিন্ন কর্মসূচিতে শাখা সংগঠনকে নামার কথা বলেন, প্রতিটি শাখা সংগঠন আলাদা করে সম্মেলন, প্রতিবাদ সভা এবং মিছিল করবে বকেয়া টাকার দাবিতে। নিজেদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব, মতভেদ রাখা যাবে না, সবাইকে একসঙ্গে চলার পরামর্শ দেন, সংবাদ মাধ্যমের কাছে কেউ আলাদা করে মুখ খুলতে পারবে না।