শিক্ষিকাকে মারধর, দিল্লিতেও প্রতিবাদ বিজেপির, দেখা করলেন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে, পরশু বিক্ষোভ গান্ধী মূর্তি পাদদেশে

আমাদের ভারত, শ্রীরূপা চক্রবর্তী, ৪ ফেব্রুয়ারি: দিন তিনেক আগে এক মধ্যযুগীয় বর্বরতার ঘটনার সাক্ষী হয়েছে রাজ্যবাসী। ব্যক্তিগত সম্পত্তির উপর দিয়ে জোর করে রাস্তা তৈরিতে বাধা দেওয়ায় বিজেপির কর্মী তথা শিক্ষিকা ও তার দিদিকে কুকুরের মত বেঁধে টেনে হিঁচড়ে প্রকাশ্যে রাস্তা দিয়ে নিয়ে গেছে স্থানীয় তৃণমূলের নেতারা। দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের এই ঘটনায় উত্তাল হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। ঘটনার প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে বিজেপির রাজ্যস্তরীয় নেতৃত্ব। এবার এই বর্বোরোচিত ঘটনার প্রতিবাদে দিল্লিতেও সোচ্চার হলেন বিজেপির সাংসদরা। এই ঘটনার সম্পর্কে জানিয়ে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা অবনতির অভিযোগ ও করেন তারা রাষ্ট্রপতির কাছে। একই সঙ্গে এই ঘটনার প্রতিবাদে সংসদ চত্বরে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে তারা বিক্ষোভ দেখাবেন বৃহস্পতিবার।

মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতির কাছে রাজ্যের ১৮ জন সাংসদ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর থানার নন্দনপুর এলাকায় মহিলাকে হেনস্থার ঘটনার পাশাপাশি রাজ্যের সমস্ত জেলার আইনশৃঙ্খলার অবনতির ঘটনা তুলে ধরেন বলে জানান সাংসদ সুকান্ত মজুমদার।

তাঁর অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গের মত জায়গায় এক শিক্ষিকার সাথে মৃত কুকুরের মত আচরণ করা হয়েছে। অথচ এই বর্বোরোচিত ঘটনার পরেও আসল অভিযুক্তকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি। তার কথায় ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তৃনমূলের উপপ্রধানকে দল থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা আসলে আই ওয়াস। কিছু দিন পরে আবার ওই অভিযুক্ত দলে স্বমহিমায় বিরাজ করবে। তিনি তৃণমূলের উপর তলার নেতৃত্ব যা বলে তার কোনো সত্যতা থাকে না সেই জন্য তাদের নির্দেশ নিচুতলার কর্মীরা মানে না। রাজ্যে গণতন্ত্র ভুলুন্ঠিত বলেই রাজ্যের বিরোধীদের উপর এই অত্যাচার নেমে আসছে। সিপিএমের হার্মাদরাই আজ তৃণমূলে এসে মানুষের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলা নয় বদল চাই- এর স্লোগান আসলে ভাওতা।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত শনিবার দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরে ব্যাক্তিগত সম্পত্তির উপর দিয়ে জোর করে রাস্তা তৈরিতে বাধা দেওয়ায় মধ্যযুগীয় বর্বরতার শিকার হন এক শিক্ষিকা। মারধরের পাশাপাশি দড়ি দিয়ে কুকুরের মতো বেঁধে টেনে হিঁচড়ে প্রকাশ্য রাস্তা দিয়ে নিয়ে যান তৃণমূলের নেতারা বলে অভিযোগ। এই ভয়ঙ্কর ঘটনার ছবি ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। দড়ি দিয়ে বেঁধে টেনেহিঁচড়ে নেওয়াই নয় ওই শিক্ষিকার শ্লীলতাহানিও করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে এলাকার তৃণমূলের উপপ্রধান সহ তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। মারধর করা হয়েছে মহিলার দিদিকেও। প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয়েছে শিক্ষিকা স্মৃতিকনা দাসকে। ঘটনা জানিয়ে তারা গঙ্গারামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে ওই উপপ্রধানকে দল থেকে সাসপেন্ড করা হলেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেনি। তবে অন্য দু’জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *