সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ২ জানুয়ারি: বর্ষবরণের রাতে যাদবপুরে পোদ্দার নগর আবাসনে রুফটপ পার্টি থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল গৃহবধূ সুইটি সূত্রধরের। সেই ঘটনার তদন্তে গিয়ে পাঁচিলের বাইরের দিকে দেওয়ালে নখের আঁচড়ের দাগ পেল ফরেনসিক দল। জানা গিয়েছে, নিচ থেকে কান্নার আওয়াজ ভেসে আসতেই ছাদে থাকা পার্টিতে মত্ত লোকজন পুলিশকে খবর দেন। কিন্তু সেই সময় সুইটির স্বামী কুন্তল কোথায় চলে গিয়েছিলেন, আপাতত সেটাই ভাবাচ্ছে পুলিশকে।
জানা গিয়েছে, যাদবপুরের পোদ্দারনগরে ২/২৪ প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের ওই বহুতলের চারতলার ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন কুন্তল এবং তাঁর স্ত্রী সুইটি। পুরুলিয়ার বাসিন্দা কুন্তলের পারিবারিক হোটেল ব্যবসা রয়েছে। সুইটি একটি কল সেন্টারে কর্মরতা ছিলেন। বছরখানেক আগে তাঁদের বিয়ে হয়। মাস চারেক আগে তাঁরা পোদ্দারনগরের এই ফ্ল্যাটে আসেন।
ওই বহুতলের ছাদের মধ্যিখানের একটি ফাঁকা অংশে সুইটির দেহ পাওয়া যায়। পড়ে যাওয়ার সময় ওই ফাঁকা অংশের একটি দেওয়ালে তাঁর নখের আঁচড়ও রয়েছে। যা প্রথম দিকে একটু ঘন এবং পরের দিকে সরু হয়ে গিয়েছে। পুলিশের অনুমান, পড়ে যাওয়ার সময় সুইটি পাঁচিলটি আঁকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করেছিলেন। পার্টিতে থাকা লোকজনদের কেউ কেউ জানাচ্ছেন সুইটি পাঁচিলের উপর বসেছিলেন। তাহলে সুইটি পাঁচিলটি আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করলেন কি করে?
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই বহুতলের ছাদের ফাঁকা অংশটির দূরত্ব খুবই বেশি। একদিক থেকে অন্য দিকের ছাদে লাফিয়েও যাওয়া অসম্ভব নয়। ওই আবাসনের বাসিন্দাদের দাবি, তারা গভীর রাত পর্যন্ত ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত সেখানে সুইটি এবং তাঁর স্বামী কুন্তল ছিলেন। আবার কুন্তল পুলিশের কাছে দাবি করেন, তিনি একটা সময়ের পর ঘরে চলে গিয়েছিলেন। তখন একাই ছিলেন সুইটি। প্রশ্ন উঠছে, ওই রাতে সুইটি ছাদের অন্যপ্রান্ত যাওয়ার জন্যে কি লাফ দিয়েছিলেন? মত্ত অবস্থায় এমন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ কি সুইটির পক্ষে করা সম্ভব? যখন ছাদে কেউ ছিলেন না তখন সুইটিকে একা ফেলে কুন্তলই বা কেন চলে গেলেন? না কি সঠিক সময়ের অপেক্ষায় ছিলেন তিনি? কুন্তলের কি কোন বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল? সেই নিয়ে কি ফাঁকা ছাদে বচসা হয়েছিল স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে? এরকম একাধিক প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছেন তদন্তকারীরা।