পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৫ জুন: ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন এলাকা থেকে বন্যার জল কমতে শুরু করেছে। যদিও এখনো বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত। তবুও এখনই জল যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাচ্ছে না ঘাটালবাসী।
টানা বৃষ্টির জেরে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে সৃষ্টি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। ক্ষতি হয়েছে কৃষির। বিঘার পর বিঘা জমি জলের তলায়। এখনো পর্যন্ত অনেক মানুষ ত্রাণ শিবিরে আছেন। রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে তাদের। ঘাটাল পৌরসভা এলাকাতেও রান্না করা খাবার বিলি করা হচ্ছে। মোতায়েন আছে এনডিআরএফ ও এসডিআরএফ। প্লাবিত এলাকায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে পানীয় জলের পাউচ। প্রান্তিক প্লাবিত এলাকাগুলিতে বিদ্যুৎ সংযোগ এখনো দেওয়া হয়নি।
বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে নবান্নে। ঘাটাল, চন্দ্রকোনা ১, চন্দ্রকোনা ২, গড়বেতা ১, গড়বেতা ২ ব্লক প্লাবিত। বন্যা এবং বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে তিল, চিনেবাদাম, পাট এবং শাকসবজি চাষের।
প্রায় ৮২০টি বাড়ি সম্পূর্ণ এবং ১৪৮৪টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিভিন্ন রাস্তা। ঘাটাল ব্লকের ৫২টি, চন্দ্রকোনা ১ ব্লকের ৭৫টি, চন্দ্রকোনা ২ ব্লকের ৩৫টি, গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঘাটালের বন্যা প্রসঙ্গে ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস জানান, ইতিমধ্যে জল কমতে শুরু করেছে। ১৮৮টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছে। ২ লক্ষ্যেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এই বন্যার কারণে। প্রায় দু’ হাজার মানুষকে উদ্ধার করে ত্রাণ শিবিরে এনে রাখা হয়েছে। চন্দ্রকোনা এক নম্বর ব্লকে একজন এবং চন্দ্রকোনা দু’নম্বর ব্লকে একজন, মোট দু’জন লোকের মৃত্যু হয়েছে বন্যার জলে তলিয়ে গিয়ে। গর্ভবতী মহিলাদের উদ্ধার করে ঘাটাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সরকারি উদ্যোগে শুরু হয়েছে মেডিকেল ক্যাম্প। জলমগ্ন হয়ে কোনভাবেই যাতে কেউ অসুস্থ হয়ে না পড়ে তার জন্যই এই ব্যবস্থা। দেওয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ওআরএস। সরকারি উদ্যোগে চালু হয়েছে নৌকা পরিষেবা। গবাদি পশুর খাদ্য সরবারাহ করা হয়েছে।
ঘাটালবাসীরা জানান যে, আমরা কবে এই জল যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাব ঠিক নেই। সরকারি কোনো সাহায্য পাচ্ছি না। রাতে বাড়ির লোকজনের কোনো অসুবিধা হলে নৌকার ব্যবস্থা নেই। চারিদিকে শুধু জল। যাদের বাড়িতে ডিঙ্গি নৌকা আছে তাদের সুবিধা। ঘাটাল মাষ্টার প্ল্যান কবে হবে জানি না, ছোট থেকেই শুনে আসছি, কিন্তু কোন কিছুই দেখতে পাচ্ছি না।
ঘাটালের বিধায়ক শীতল কপাট জানিয়েছেন যে, ঘাটালের মাষ্টার প্ল্যান সোনার পাথর বাটি। কেন্দ্র এবং রাজ্য দুই সরকারকে একসঙ্গে মিলে কাজ করতে হবে। কিন্তু রাজ্য সরকার চায়না কেন্দ্রীয় সাহায্য। সামান্য দুই দিনের বৃষ্টিতে এই অবস্থা, তাহলে ভারী বৃষ্টিতে কী হবে। ঘাটাল মাষ্টার প্ল্যান নিয়ে রাজ্য সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই। শুধু চুরির রাজনীতি।