‘Flavors of India’, ‘ফ্লেভারস অফ ইন্ডিয়া’, ভারতীয় রান্নার স্বাদ তুলে ধরলেন ছাত্রছাত্রীরা

আমাদের ভারত, ১ ফেব্রুয়ারি: মশলার খোঁজেই একদিন সুদূর ইউরোপ থেকে লোকজন স্থলপথে এসেছিল ভারতে। সেই মশলার গন্ধে মাতোয়ারা হয়ে তারা আবিষ্কার করেছে একের পর এক জলপথ। নানা মশলার মিশেলে এবার নতুন রান্না করলেন হবু শেফরা।

বিশ্বায়নের ধাক্কায় হারাতে বসা নানা রান্না নতুন করে প্রাণ পেল তাঁদের হাতের ছোঁয়ায়। ‘বেটার কিচেন’’ পত্রিকার উদ্যোগে এরাজ্যের দুর্গাপুরে হয়ে গেল এভারেস্ট বিকেসিসি (বেটার কিচেন কুলিনারি চ্যালেঞ্জ)। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হোটেল ম্যানেজমেন্টের চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীরাই এই প্রতিযোগিতায় যোগ দেন।

পশ্চিমবঙ্গ থেকে যাঁরা সেমিফাইনালের গণ্ডি পার করলেন, চূড়ান্ত পর্বের জন্য তাঁদের যেতে হবে মুম্বই। দুর্গাপুরে হোটেল ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান এনএসএইচএম-এ এবারের প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল ‘ফ্লেভারস অফ ইন্ডিয়া’- মানে ভারতের রান্নাবান্নার আস্বাদ। তাতে ছাত্রছাত্রীদের হাতের গুণে অনেকেই আস্বাদ নিয়েছেন ঠাকুমা-দিদিমার হাতে খাওয়া রান্নার। পুরনো দিনের রান্না আর তা পরিবেশন করা হয়েছে ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে আধুনিক আপ্যায়নের মিশেলে।

শুধু রান্না করে মন মাতানো নয়, এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আগামী দিনের শেফরা একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হতে পারেন। বিভিন্ন প্রদেশ ও ঘরানার রান্নার সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত হতে পারেন। এভারেস্ট বিকেসিসি সেশন ৫-এর বিচারকমণ্ডলীর মধ্যে ছিলেন ফর্চুন হোটেলের এগজিকিউটিভ শেফ দেবদত্ত বন্দ্যোপাধ্যায় ও শেফ দীপনাথ মুখোপাধ্যায়। প্রতিযোগীদের উপকরণ ব্যবহারের কৌশলের তাঁরা প্রশংসা করেন।

তাঁদের মতে এই ধরনের প্রতিযোগিতার ফলে ভবিষ্যতের শেফরা শিখতে পারেন, বৃহত্তর ক্ষেত্রে নিজেদের মেলে ধরতে পারেন এবং পেশাদারি দক্ষতার উন্নতিও করতে পারেন। সেশন ৫-এ মোট ১৫টি শহরজুড়ে হচ্ছে, এর মধ্যে রয়েছে: লখনউ, দুর্গাপুর, চণ্ডীগড়, দেরাদুন, দিল্লি এনসিআর, ইন্দোর, কোট্টায়ম, বেঙ্গালুরু,জয়পুর, পুণে, পাটান, মুম্বই, কোলাপুর ও গোয়া। প্রতিটি শহরের চ্যাম্পিয়নরা মার্চের ২৯-৩০ তারিখ চূড়ান্ত পর্যায়ে রান্না করবেন মুম্বইয়ে।

এই প্রতিযোগিতায় পাশে রয়েছে কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রক, ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর হোটেল ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ক্যাটারিং টেকনোলজি, উত্তরপ্রদেশ পর্যটন বিভাগ, ইন্ডিয়া কুলিনারি ফোরাম, ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়া শেফস অ্যাসেসিয়েশন, শেফস অ্যাসোসিয়েশন অফ ফাইভ রিভার্স, বারানসী শেফস অ্যাসোসিয়েশন, তেলাঙ্গানা সেফস অ্যাসোসিয়েশন।

‘বেটার কিচেন’ পত্রিকার প্রকাশক একতা ভার্গব মনে করেন, এই প্রতিযোগিতার ফলে প্রতিযোগিরা আরও বেশি করে ভারতীয় রান্নার ব্যাপারে আগ্রহী ও দক্ষ হয়ে উঠবেন। একই সঙ্গে তাঁরা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতীয় খাবার ও রন্ধনপ্রণালীও জনপ্রিয় করার ব্যাপারে সাহায্য করতে পারবেন।

এ বছর থেকে এই প্রতিযোগিতার সঙ্গে চালু হলো বেটার কিচেন বেকারি প্রতিযোগিতাও। এই সব প্রতিযোগিতায় সারা দেশের মধ্যে যিনি চ্যাম্পিয়ন হবেন তিনি ইউএসএ শেফ এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রামে ৫৭৫০ মার্কিন ডলার স্কলারশিপ পাবেন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানাধিকারী পাবেন যথাক্রমে ১০০০ ও ৭৫০ মার্কিন ডলারের স্কলারশিপ।

সঙ্গে এভারেস্ট বিকেসিসি-র ইন্টারন্যাশনাল প্লেসমেন্ট অ্যান্ড স্টাডি অ্যাব্রোড পার্টনার, উইজডম কেরিয়ার এবং এডুকেশনের সহায়তায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক বছরের শিক্ষানবীশর সুযোগ পাবেন।

এনআইএইচটিএম দুর্গাপুর এনএসএইচএম নলেজ ক্যাম্পাসের অধ্যক্ষ ডঃ মিলিন্দ মনে করেন, জাতীয় স্তরে প্রতিযোগিতার সুযোগ পেয়ে ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের আরও মেলে ধরার সুযোগ পেয়েছেন। এই মরশুম যত বেশি করে হবে ছাত্রছাত্রীরাও তত বেশি সুযোগ পাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *