শোভনের নাম শুনেই খেপে গেলেন ফিরহাদ

তারক ভট্টাচার্য

আমদের ভারত, ১৬ নভেম্বর: যেন হারার আগে হেরে বসে আছে গোটা দলটা। লোকসভা ভোট বুঝিয়ে দিয়েছে, একদা তৃণমূলের গড় বলে পরিচিত কলকাতায় বিজেপি এবং বামেদের শক্তি আগের চেয়ে অনেকখানি বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে আগামী বছর পুরভোট। সেকথা মাথায় রেখে, শনিবার কলকাতা পুরসভার দলীয় কাউন্সিলর এবং ওয়ার্ড সভাপতিদের এক বৈঠকে ভোকাল টনিকে চাঙ্গা করার চেষ্টা চালালেন তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম। ওয়ার্ড সভাপতি এবং কাউন্সিলরদের হাতে ধরিয়ে দিলেন ‘দিদিকে বলো’র কিটস। মানে বেশ কিছু কাগজপত্র-সহ নির্দেশিকা। কর্মসূচি শেষের সময়সীমা বেঁধে দিলেন। তিন দিনে একটি জায়গায় এই কর্মসূচি চালাতে হবে। ১৪ দিনে চারটি জায়গায় চালাতে হবে কর্মসূচির মতো বেশ কিছু নির্দেশ দিলেন। ওয়ার্ডেই দলীয় কর্মীর বাড়িতে রাত্রিবাস করবেন কাউন্সিলর। দলীয় কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করতে হবে প্রত্যেক কাউন্সিলরকে, এই সব বলে দিলেন।

নিন্দুকরা বলেন, কলকাতা পুরসভায় ফিরহাদের বেলাগাম হয়ে যাওয়া রুখতে অতীন ঘোষকে ডেপুটি মেয়র করেছেন মমতা। সেই অতীনও এদিন বৈঠকে ছিলেন ফিরহাদের সঙ্গে। তবে, যাঁকে নিয়ে ইদানিং গণমাধ্যমে সবচেয়ে বেশি চর্চা, সেই শোভন চট্টোপাধ্যায় দলবদলের জল্পনা জিইয়ে রেখেই এদিন বৈঠকে আসেননি। বদলে, বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে হাসপাতালে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত বিজেপি নেতা অরবিন্দ মেননকে দেখতে গিয়েছিলেন। তিনি আমন্ত্রিত ছিলেন কি না, সেই প্রশ্ন যেন অবান্তর বলে হাবেভাবে বোঝাতে চেয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

৪১, কালীঘাট রোডের জয়হিন্দ ভবনে এদিন বৈঠক এবং তার শেষের অধ্যায়ে বাকি সবই ছিল গতানুগতিক। শুধু, শোভন চট্টোপাধ্যায় দলে যোগ দিতে পারেন কি না, বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখে এই প্রশ্ন শুনে খেপে গেলেন ফিরহাদ হাকিম। বললেন, ‘তিনি কী করবেন, সেটা জানতে গেলে আমাকে জ্যোতিষী হতে হবে।’ গতানুগতিক বাকি সবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, গোটা রাজ্যে হাস্যস্পদ হয়ে ওঠা ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি কলকাতার বুকে চালানোর চেষ্টা। বাকি রাজ্য ইতিমধ্যে বুঝে গিয়েছে, ‘দিদিকে বলো’য় ফোন করে দিদিকে পাওয়া যায় না। যাঁরা ফোন ধরেন, অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করেন। কিন্তু, কলকাতা সেসব খুব বেশি প্রত্যক্ষ করেনি। কারণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেড়ে ওঠা দেখেছে এই শহর। এখনও প্রায় রোজই মমতাকে কালীঘাট আর নবান্নে যাতায়াত করতে দেখে কলকাতা। টিভিতে তাঁর আশপাশে যাঁদের দেখে, কলকাতাবাসী তাঁদের দেখতে পায় নিজের বাড়ির আশপাশে। সেই জন্য এই শহরে ‘দিদিকে বলো’ চলতে পারে বলেই আশাবাদী তৃণমূল। যাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত এই ‘দিদিকে বলো’, সেই প্রশান্ত কিশোর এদিন বৈঠকে ছিলেন না। কিন্তু, কালো পোশাক পরা তাঁর কর্মীরা ছিলেন। আসার কথা থাকলেও ছেলেকে নিয়ে ব্যস্ত অভিষেকও এড়িয়ে গিয়েছেন বৈঠক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *