অমরজিৎ দে, ঝাড়গ্রাম, ১৪ জানুয়ারি: মোরগ নয় বুলবুলির লড়াই। ঐতিহ্য প্রাচীন বুলবুলি পাখির লড়াই এখনও হারিয়ে যায়নি, সেই ঐতিহ্য চলে আসছে এখনও। বিরল এই পাখির লড়াই ঘিরে উন্মাদনা এখন তুঙ্গে জঙ্গলমহলের বৈষ্ণবতীর্থ গোপীবল্লভপুরের আমজনতার লোকাচার ও লোকবিশ্বাস।
মাঝে এক টুকরো কলা, আর তার দখল নিতে ঝাপটা ঝাপটি। টেবিলের পাশে জড়ো হওয়া দুই শিবিরে উত্তেজনা তুঙ্গে। পাড়ার সম্মান রাখার লড়াই বলে কথা। পুষ্টিকর খাবার খাইয়ে যত্নআত্তি নিয়ম মেনেই প্রশিক্ষণ। মকর সংক্রান্তির পুণ্যস্নানের পরেই তোয়ালে ঢাকা টেবিলের মধ্যে হয় এই লড়াই। এই যুদ্ধে হারলে সেই পাখিকে চিহ্নিত করতে কাটা হয় ঝুঁটি আর বিজয়ী দলের মালিকের মেলে পুরস্কার। এই বুলবুলির লড়াই দেখতে মকর সংক্রান্তির সকাল থেকে ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর এক নম্বর ব্লকের রাধা গোবিন্দ জিউর মন্দিরের কাছে চাঁদোয়া টাঙিয়ে তৈরি হয় এই লড়াইয়ের মঞ্চ। সেখানে অভুক্ত রাখা পাখিদের একে অপরের বিরুদ্ধে মুখোমুখি লড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিল।
গোপীবল্লভপুরের প্রতিদ্বন্দ্বী স্বরূপ দাস বলেন, এবছর আমাদের বাজার অর্থাৎ সাই পাড়া জয়লাভ করেছে এই বুলবুলির লড়াইতে। করোনা পরিস্থিতির জন্য কোনও হাউসিয়া এবছর পাখি ধরতে যেতে পারেননি। তাই অন্যান্য বছর যেখানে দুশো থেকে আড়াইশো পাখির লড়াই হতো এবার ৮০টি পাখি লড়াই মঞ্চে এসেছিল। দুপুর ১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টে পর্যন্ত এই লড়াই চলেছে। প্রতিটি রাউন্ডে যে পাখি হেরে যায় সেই পাখির মাথায় ঝুঁটি কেটে দিয়ে বোঝানো হয়েছে ওই পাখি বিজিত আর যে পাখি সবথেকে বেশি কামড় দিয়েছে সেই পাখির মালিককে পুরস্কৃত করা হয়েছে। আমরা এরপর পাখিগুলোকে কিছুদিন খাইয়ে জঙ্গলে ছেড়ে দেবো।