ঋণের দায়ে আত্মঘাতী কৃষক, অস্বীকার কৃষিমন্ত্রীর

আমাদের ভারত, রামপুরহাট, ১১ জানুয়ারি: ঋণে জর্জরিত হয়ে কৃষিমন্ত্রীর জেলাতেই কৃষকের আত্মহত্যাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল। যদিও কৃষকের আত্মহত্যার কথা অস্বীকার করেছেন কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।

মৃত কৃষকের নাম হৃদয় লেট (৪৯)। বাড়ি বীরভূমের নলহাতি থানার হরিপুর গ্রামে। তার তিন মেয়ে ও এক ছেলে। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন আগেই। বাড়িতে রয়েছেন বিধবা মা, স্ত্রী ও অবিবাহিত ছেলে। পেশায় দিনমজুর হলেও মাঝে মধ্যে ভাগে জমি নিয়ে চাষ করতেন তিনি। দিন আনতে পান্তা ফুরোয় সংসারে ভাগে জমি নিয়ে সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরানোর চেষ্টা করেছিলন। সেই মতো মহাজনী ঋণ নিয়ে দেড় বিঘে জমি নিয়ে ধান চাষ করেছিলেন তিনি। কিন্তু চুষি পোকায় সেই ধান নষ্ট করে দেয়। এরপর আলু চাষ করে ভেবেছিল ঋণ পরিশোধ করবেন। সেই মতো ১৭০০ টাকা দরে দুই কুইন্টাল আলু বীজ কিনেছিলেন। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় ধসা রোগে সেই আলুও নষ্ট হয়ে যায়। ফলে ঋণে জর্জরিত হয়ে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। এরপরেই শুক্রবার বিকেলের দিকে বাড়িতে থাকা কীটনাশক খেয়ে ফেলেন। তাকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে শনিবার সকালে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

মৃত কৃষকের স্ত্রী হাসি শেখ বলেন, “ধান আগেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তারপর চড়া দামে আলুর বীজ কিনে চাষ করেছিল। কিন্তু কুয়াশার কারণে সেই আলুতে ধসা লেগে নষ্ট হয়ে যায়। এদিকে বাড়িতে প্রতিদিন মহাজনের লোকজন টাকা চাইতে আসত। এতেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে স্বামী। তারপরেই আত্মহত্যা করে”।

স্বামীর মৃত্যুতে অসহায় হয়ে পড়ে ওই পরিবার। কারণ ছেলে দুর্ঘটনায় পা ভেঙেছে। ফলে সেও ঠিক মতো কাজকর্ম করতে পারে না। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুতে এখন কি করবেন ভেবে উঠতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরা।

যদিও কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এরাজ্যে একজন কৃষকও আত্মহত্যা করেনি। ওই ব্যক্তির আত্মহত্যার পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *