আমাদের ভারত, বালুরঘাট, ৭ মার্চ: হিলিতে ভুয়ো চিপসের কারখানার হদিশ। সরকারি নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রমরমিয়ে প্যাকেটজাত করার কাজ। ঘুমিয়ে প্রশাসন। সরকারি নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয় সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে চলছে মুখরোচক খাবার প্যাকেটজাত করার কাজ বলে অভিযোগ। শনিবার রাতে গোপন খবরে এলাকায় অভিযানে গেলেও অভিযুক্ত ওই অবৈধ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই গ্রহণ করতে পারেনি প্রশাসন। সরকারি কোনো কাগজপত্র ছাড়াই দিল্লি এবং বিহার থেকে আনা প্ল্যাস্টিক প্যাকেটে ভরে চলছে রমরমা চিপস বিক্রির কাজ। অবৈধ এমন কারবারে মুখরোচক ওই খাবারে ছোট ছোট শিশুদের যেকোনো মুহুর্তে বড় ধরনের বিপদের আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী হিলির ধলপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের লালপুর এলাকার ঘটনা। অভিযুক্তকে তিন দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে কারখানা সিল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি বিডিওর।
জানা যায়, এলাকার বাসিন্দা সমরেশ মহন্ত পেশায় হকার হিসাবেই পরিচিত। বেশকিছু দিন ধরে তিনি নিজের বাড়িতে কারখানা খুলে বিহার এবং দিল্লি থেকে আনা প্ল্যাস্টিক প্যাকেটে চিপস ভরে তা প্যাকেটজাতও করে বিক্রি শুরু করেন। অভিযোগ শিশু ও বড়দের মুখরোচক হিসাবে তৈরি চিপসের ওই প্যাকেটগুলিতে দিল্লি এবং বিহারের ভুয়ো ঠিকানাও ব্যবহার করা হচ্ছে । শুধু চিপস নয়, অন্যান্য মুখরোচক খাবার তৈরি করে তাও দেদার প্যাকেট করা হচ্ছে সীমান্তের ওই কারখানা থেকে বলেও খবর। জেলা সহ জেলার বাইরেও বিক্রি করা হচ্ছে লোভনীয় ওই খাবার বলে অভিযোগ। আর যাকে আশ্রয় করেই রাতারাতি ফুলে ফেপে উঠেছেন ওই ব্যবসায়ী বলেও অভিযোগ। শুধু লালপুরের ওই ব্যবসায়ীই নয় হিলির ত্রিমোহিনীতে আরো একাধিক চক্র জড়িত রয়েছে এমন কারবারে বলেও অভিযোগ। প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দেদার চলছে এমন অবৈধ খাবার বিক্রির কারবার।
দীর্ঘ ছয় মাস ধরে এমন ব্যবসা চললেও শুক্রবার রাতে হিলি পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে বিডিওর প্রতিনিধি দল লালপুর এলাকায় ওই কারখানায় হানা দেয়। যেখানে তদন্তকারী দলকে কোন কাজগপত্রই দেখাতে পারেন নি ওই ব্যবসায়ী বলেও জানিয়েছে ওই প্রতিনিধি দল। প্রশাসন সূত্রের খবর, মেশিনপত্র বসিয়ে এমন কারবার করতে গেলে নির্দিষ্ট দপ্তরের বেশকিছু অনুমতির প্রয়োজন। কিন্তু এক্ষেত্রে ওই ব্যবসায়ীর কাছে কিছুই পাওয়া যায়নি । শুধু পঞ্চায়েতের একটি ট্রেড লাইসেন্সের উপর ভর করে প্রশাসনের নাকের ডগায় মাসের পর মাস কিভাবে চলছে এমন কারবার তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন।
ব্যবসায়ীর বাবা নির্মল মহন্ত জানিয়েছেন, বাইরে থেকে প্যাকেট আসে। যেগুলিতে চিপস ভরে বিক্রি করা হয়।
ব্যবসায়ী সমরেশ মহন্ত জানিয়েছেন, আগে হকারির কাজ করতেন। সকলেরই বড় হবার ইচ্ছা থাকে। সেই লক্ষ্যেই এমন ব্যবসা। তাঁর ট্রেড লাইসেন্স আছে।
তদন্তে যাওয়া বিডিওর প্রতিনিধি ব্রজেন্দ্রনাথ রায় জানিয়েছেন, তাঁকে কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি ওই ব্যবসায়ী। যার রিপোর্ট বিডিওকে পেশ করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা হোপনা কিস্কু জানিয়েছেন, এখানে খাবার তৈরি করে বাইরে বিক্রি করা হয়। ঘটনা নিয়ে তারাও আতঙ্কিত।
হিলির বিডিও সৌমেন বিশ্বাস জানিয়েছেন, কোন কাগজ নেই। বুধবার পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সঠিক কাগজ পত্র দেখাতে না পারলে ওই কারখানা সিল করে দেওয়া হবে।