সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ৭ জুলাই: কারখানার চুল্লি বিস্ফোরণে তরল লোহায় গুরুতরভাবে ঝলসে গেলেন কর্মরত ৯ জন শ্রমিক। এই ঘটনায় কারখানায় শ্রমিক সুরক্ষায় কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ তুলে কারখানার ভিতরে বিক্ষোভ দেখান কর্মীরা। শনিবার রাত ৮ নাগাদ অর্জুন দাস প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি ক্ষুদ্র ইস্পাত কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।
জানাগেছে, লৌহ আকরিক গলানোর চুল্লিতে আচমকা বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে তরল লোহা জলের মত অবস্থায় চারিদিকে ছিটকে পড়ে। যে শ্রমিকরা ওই লোহা গলানোর কাজে যুক্ত ছিলেন তাদের মধ্যে ৯ জন ফুটন্ত তরলে ঝলসে যান। বেশ কয়েক জনের গায়ের চামড়া খুলে পড়ে যায়। জখম শ্রমিকদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কারখানার ভিতরে কোনও গাড়ি ছিল না। এই অবস্থায় যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকেন জখম শ্রমিকরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন বড়জোড়ার বিধায়ক অলক মুখার্জি ও ঘুটগোড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গণেশ মন্ডল। তারাই বাইরে থেকে গাড়ির ব্যবস্থা করে জখমদের বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান।প্রাথমিক চিকিৎসার পর ৮ জনকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
রবিবার হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে, ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের আইসিইউতে রাখা হয়েছে। এই ৩ জনের মধ্যে গঙ্গা সাগর ও সোনু পাশওয়ান বিহারের ও পরেশ রায় স্থানীয় বাসিন্দা। বিধায়ক অলক মুখার্জি কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে বলেন, চিকিৎসার সমস্ত খরচ ও সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত পুরো মাইনে দিতে হবে কর্তৃপক্ষকে।
সিপিআইএম নেতা সুজয় চৌধুরীর অভিযোগ, শাসক দলের নেতাদের সঙ্গে আঁতাত করেই বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলের কারখানা মালিকরা শ্রমিক সুরক্ষার বিষয়ে যেমন উদাসীন তেমনি নানা সুবিধা থেকে বঞ্চিত করছেন। আমরা বারবার শ্রম আধিকারিকদের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কিছু আদায় করে দিতে পারিনি।
বিজেপির বড়জোড়া মন্ডল সভাপতি গোবিন্দ ঘোষ দাবি করেন, বড়জোড়া শিল্পতালুকে এরকম দুর্ঘটনা ঘটেছে তারপরও মালিকদের হুঁস ফেরেনি তার একটাই কারণ তৃণমূল নেতাদের মদত।
এবিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানা কর্তৃপক্ষের এক আধিকারিক বলেন, সুরক্ষার বিষয়ে আমরা আপোষ করি না। কিন্তু কিভাবে দুর্ঘটনা ঘটল বুঝতে পারছি না। কারণ নিয়মিত যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হয়।