আমাদের ভারত, ঝাড়গ্রাম, ২০ আগস্ট: হাতির হানায় ঝাড়গ্রামে মৃত্যুর মিছিল অব্যাহত। ৬ দিনে হাতির হানায় মৃত্যু হল ৩ জনের। হাতির হানায় গ্রামবাসীর মৃত্যু হতেই বনদপ্তর ও পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করে গ্রামবাসীরা। মঙ্গলবার সকালে ঝাড়গ্রাম থানার অন্তর্গত আঁধারিশোল গ্রামের ঘটনা।
হাতির হানায় মৃত গ্রামবাসীর নাম খগেন পাতর (৪৬)। বাড়ি আঁধারিশোল গ্রামে। এদিন সকালে প্রাতঃকৃত্য সারতে গিয়ে হাতির হানায় মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ঝাড়গ্রাম রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার, পুকুরিয়া বিটের বিট অফিসার ও পুলিশ পৌঁছলে তাদের ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করে গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, প্রতিনিয়ত হাতির হানায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। পাঁচ লক্ষ টাকা কোনও মানুষের জীবনের ক্ষতিপূরণ হতে পারে না। অবিলম্বে সমস্যার সমাধান করতে হবে এবং ঘটনাস্থলে পৌঁছে ডিএফও এবং বনমন্ত্রীকে হাতির সমস্যার সমাধানের লিখিত আশ্বাস দিতে হবে। এই বিষয়গুলিকে সামনে রেখে হাতির হানায় মৃত ব্যক্তির দেহ আটকে বনদপ্তর ও পুলিশকে বিক্ষোভ দেখায় গ্রামবাসীরা।
আঁধারিশোল গ্রামের পঞ্চায়েত আনন্দ মাহাতো বনদপ্তরের ভূমিকায় ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, “প্রতিনিয়ত এখানে হাতির হানায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। কোনও স্থায়ী সমাধানের ভাবনা চিন্তা নেই। সকাল থেকে ডিএফওকে বহুবার ফোন করা হয়েছে তিনি ফোন ধরেনি। বনমন্ত্রীকে আমরা কখনো দেখতেও পারিনি। হাতির হানায় কারো মৃত্যু হলে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে। কোনও মানুষের জীবনের মূল্য কি পাঁচ লক্ষ টাকা? পাঁচ লক্ষ টাকার পরিবর্তে ৫০ লক্ষ টাকা দিতে হবে এবং পাঁচ দিনের মধ্যেই চাকরি দিতে হবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে।”
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতা দিবসের দিন বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম শহরে পাঁচটি হাতির একটি দল ঢুকে পড়ে। হাতির দলের হানায় ঝাড়গ্রাম শহরের বিদ্যাসাগরপল্লী এলাকার বাসিন্দা অনুপ মল্লিক (৫৪) এর মৃত্যু হয়। তারপর শনিবার ভোরে ঝাড়গ্রাম থানার অন্তর্গত পশরো গ্রামে হাতির হানায় চাঁদ খিলাড়ির (৬১) মৃত্যু হয়। গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু করে মঙ্গলবার পর্যন্ত মাত্র ছয় দিনে হাতির হানায় মৃত্যু হল তিন জনের। অপরদিকে, স্বাধীনতা দিবসের দিন শহরে ঢুকে পড়া হাতিগুলিকে জঙ্গলে পাঠানোর সময় হুলা পার্টির জ্বলন্ত শলাকায় বিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় একটি স্ত্রী হাতির। স্ত্রী হাতির মৃত্যুতে রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রাম বন বিভাগে ৩৬টি হাতি রয়েছে। ঝাড়গ্রাম রেঞ্জের সিধাডাঙ্গাতে ৫টি হাতি, বৃন্দাবনপুরে ১২ টি হাতির একটি দল, নেদাবেহড়ায় ৪ টি হাতি, পাথরচাকরিতে ৩ টি হাতি, পুকুরিয়ায় ১ টি হাতি, কুসুমডাঙ্গায় ১০ টি হাতির একটি দল। এছাড়াও বড়াশুলিতে রয়েছে ১ টি হাতি।