আমাদের ভারত, ১৩ এপ্রিল: হেলথ ড্রিংক- এর তকমা হারালো বর্নভিটা। কেবল বর্নভিটাই নয়, একই ধরনের একাধিক কোম্পানিকে হেলথ ড্রিঙ্ক ক্যাটাগরি থেকে সরানোর নির্দেশ দিল কেন্দ্র।
এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তরফে। কিন্তু কেন বর্নভিটা হেলথ ড্রিংকের তকমা হারালো? বিজ্ঞাপনের জোয়ার দেখা গিয়েছিল ৯ দশকের গোড়ায়। টেলিভিশনে সৌজন্যে বোকা বাক্সের আধিপত্য যত বেড়েছে দেশে তত জনপ্রিয় হয়েছে হরলিক্স, ভিভা, বুস্ট, বনভিটা কমপ্ল্যানের মতো হেল্থ ড্রিংক্স। কাপিল দেব থেকে কৃষ্ণ মাচারি শ্রীকান্তের মতো বিখ্যাত খেলোয়াড়দের দিয়ে যেমন বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে তেমনি টিভির পর্দার নকল চিকিৎসকরা গলায় স্টেথো ঝুলিয়ে নিজের নিজের ব্র্যান্ডে তুমুল প্রচার চালিয়েছেন। আর এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলিতে। সব বাড়ির রান্না ঘরে কিংবা ডাইনিং টেবিলে শোভা পায় জনপ্রিয় ড্রিংক্সগুলি। যদিও এই বিষয়ে ন্যাশনাল কমিশন অফ প্রটেকশন ফর চাইল্ড রাইটস চিন্তার কথা জানায়।
সিআরপিসি অ্যাক্ট ২০০৫- এর সেকশন ১৪ আওতায় এক তদন্ত চালিয়েছিল। শিশু অধিকার রক্ষার কাজটি করা সংস্থাটি তদন্ত চালিয়ে দেখেছে বর্নভিটায় রয়েছে মাত্রারিক্ত চিনি। হেলথ ড্রিংক্সে যে পরিমাণ চিনি থাকা উচিত তা পেরিয়ে গিয়েছে বর্নভিটা। ফলে এটা কখনই হেল্থড্রিংকের তালিকায় থাকতে পারে না বলে জানিয়েছে বিশেষজ্ঞরা। এর আগে ফুড সেফটি এন্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অফ ইন্ডিয়াকে ন্যাশনাল কমিশন অফ প্রটেকশন ফর চাইল্ড- এর তরফে এই সংস্থার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছিল। যদিও সেই সময় অভিযুক্ত কোম্পানিটি জানিয়েছিল তাদের প্রোডাক্ট শিশুদের জন্য নিরাপদ।
কিন্তু তদন্ত রিপোর্ট অন্য কথা বলছে। বর্নভিটায় মাত্রাতিরিক্ত চিনি, ক্ষতিকারক রং, অতিরিক্ত কোকো ব্যবহার করা হয়েছে, যা শিশুর জন্য বিষের সমতুল্য। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এখানকার বাচ্চাদের ছোট থেকে ডায়াবেটিস, হার্টের রোগ, লিভারের অসুখ দেখা যাচ্ছে। বেশিরভাগই ভুগছে ওবেসিটিতে। তার অন্যতম কারণ বাজার চলতি হেল্থড্রিংকস। বিজ্ঞাপনের চমকে ভুলে হেলথ ড্রিংঙ্ক কিনে আনছেন বাবা-মা’য়েরা আর তাতে লাভের বদলে ক্ষতি হচ্ছে শিশুদের।