আমাদের ভারত, ২৪ এপ্রিল: স্কুল সার্ভিস কমিশনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের হবু শিক্ষক পদপ্রার্থীদের আন্দোলন ২০১৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৩ দফা মিলে মোট ৪০৪ দিন হয়েছে। প্রচন্ড গরমে দিনের পর দিন এই আন্দোলন করতে গিয়ে এবার একে একে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন আন্দোলনকারীরা। এমনি এক আন্দোলনকারীকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয় শনিবার।
স্কুল সার্ভিস কমিশন মেধা তালিকায় থাকা শিক্ষক পদপ্রার্থীদের নিয়োগ না দিয়ে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণ করে গোপনে অবৈধ নিয়োগ করেছে দিয়ে যা শুধু আন্দোলনকারীদের বক্তব্য নয়, কলকাতা উচ্চ আদালতে যা বারবার প্রমাণিত হয়েছে বলেও তারা দাবি করেছেন। এই আন্দোলন চলাকালীন শনিবার ধর্মতলায় গান্ধীমূর্তির পাদদেশের ধর্ণা মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়েন খাইরুল ইসলাম নামে এক চাকরি প্রার্থী। তাকে কলকাতার এস এস কে এম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
একের পর এক চাকরি প্রার্থী ধর্ণা মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন এরা ২০১৬ সালের 1st SLST নবম-দ্বাদশ স্তরের মেধাতালিকা ভুক্ত চাকরিপ্রার্থী। মেধাতালিকায় সামনের দিকে নাম থাকা সত্ত্বেও তাদের শিক্ষকতার চাকরিতে নিয়োগ করেনি পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন বলে আন্দোলনকারীদের অভিযোগ। অথচ ঐ মেধাতালিকায় অনেক পিছনের দিকে থাকা চাকরি প্রার্থীদের র্যাঙ্ক ড্রপ করে চাকরিতে নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ । পাশাপাশি মেধাতালিকায় কোথাও নাম নেই এমন ফেল করা বহু প্রার্থীদেরও অবৈধভাবে চাকরিতে নিয়োগ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন বলে অভিযোগ।
ন্যায্য চাকরি ফিরিয়ে আনতে নবম-দ্বাদশের হবু শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীরা শান্তিপূর্ণ ভাবে তিন দফায় ৪০৪ দিন ধরে ধর্ণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা বলেন, ২০১৯ সালে কলকাতার প্রেসক্লাবের সামনে প্রথম দফায় যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের ব্যানারে ২৯ দিনের অনশন করেছিলেন। ২০২১ সালে জানুয়ারি মাস থেকে সেন্ট্রাল পার্কের পাঁচ নম্বর গেটের সামনে ১৮৭ দিনের অবস্থান বিক্ষোভ ও অনশন করেছিলেন তারা। আবার ২০২১ সালের ৮ ই অক্টোবর থেকে ১৮৮ দিন ধরে ধরে ধর্মতলায় গান্ধীমূর্তির পাদদেশে এই বঞ্চিত হবু শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীরা শান্তিপূর্ণ ভাবে ধর্ণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের স্টেট কো-অর্ডিনেটর সুদীপ মন্ডল জানিয়েছেন যে মেধাতালিকা ভুক্ত অথচ চাকরিতে নিয়োগপত্র না পাওয়া সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীদের অবিলম্বে চাকরিতে নিয়োগ করতে হবে। তিনি জানিয়েছেন যে বর্তমানে প্রচন্ড রোদে ধর্ণারত চাকরি প্রার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। রোজা রেখেও ন্যায্য চাকরির দাবিতে অনড় চাকরিপ্রার্থীগণ। বঞ্চিত শিক্ষক পদপ্রার্থীদের রাজ্য নেতৃত্ব সুদীপ মন্ডল তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সরাসরি হস্তক্ষেপ চেয়ে আবেদন রেখেছেন।

