জমি বিবাদের জের, ঘরছাড়া তিনটি আদিবাসী পরিবারের ধর্ণা রামপুরহাট থানায়

আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ৩ ডিসেম্বর: জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে ঘর ছাড়া তিনটি পরিবার। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রতিবাদে রামপুরহাট থানায় ধর্নায় বসে পরিবারের সদস্যরা। পরে পুলিশের আশ্বাসে ধর্ণা তুলে নেন আদিবাসী পরিবারগুলি।

অসহায় পরিবারগুলির সুত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে বীরভূমের রামপুরহাট থানার ঠাকুরপুরা গ্রামের কর্ণেল মাড্ডি তার দাদু লপসা মাঝির কিছু জমি মেরি মুর্মু নামে এক মহিলাকে বিক্রি করেন। এদিকে গ্রামের টিবু মাড্ডির দাবি ওই জমি তাঁর। অন্যায়ভাবে বিক্রি করেছে কর্ণেল। কয়েকজন দালালের মাধ্যমে ওই জমি বিক্রি করা হয়েছে। টিবু মাড্ডি পার্শ্ববর্তী আতুরিয়া গ্রামে ডেকে পাঠান কর্ণেল, দিলীপ সোরেন এবং বড়জোল গ্রামের দুখু রাউতকে। এরপর তাদের মারধর করে পঞ্চায়েত প্রধান দিলীপ কিস্কুর উপস্থিতিতে সালিশি সভায় নয় লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। সেই মতো মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া হয় টিবু মাড্ডির কাছ থেকে। তাতে প্রধানের উপস্থিতির উল্লেখ রয়েছে। ওই দিন তিন লক্ষ টাকা দিয়ে ছাড়া পায় ধৃতরা। একমাসের মধ্যে বাকি টাকা দেওয়ার কথা। কিন্তু সেই টাকা দিতে না পারায় গ্রাম ছাড়া তিনটি পরিবার।

বিষয়টি জানিয়ে রামপুরহাট থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপ না করায় পালিয়ে বেড়াচ্ছে পরিবারগুলি। বৃহস্পতিবার সকালে ওই তিনটি পরিবার রামপুরহাট থানার সামনে ধর্নায় বসেন। তাদের পাশে দাঁড়ায় বিজেপি। কর্ণেল বলেন, “আমার দাদুর জমি আমি বিক্রি করেছি। কিন্তু টিবু দাবি করছে, ওই জমি তার। এরপর অন্যায়ভাবে আমাদের মারধর করেছে। মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিল। কিছু লোক ছুটে এসে বাঁচিয়েছে। এখন বাকি টাকার জন্য বাড়িতে অত্যাচার চালাচ্ছে। তাই ভয়ে গ্রামে ঢুকতে পারছি না। তাই আমরা ধর্নায় বসেছিলাম। পুলিশ আশ্বাস দিয়েছে এনিয়ে দ্রুত হস্তক্ষেপ করবে। তাই আমরা ধর্না তুলে নিলাম”।

দুখু রাউত বলেন, “জমি বিক্রি নিয়ে আমাদের কোনও ভূমিকা নেই। আমরা নাকি জমি বিক্রিতে দালালি করেছি। এই সন্দেহের বশে আমাদের মারধর করেছে টিবু। তবে সালিশি সভায় প্রধান উপস্থিত ছিলেন”।

প্রধান দিলীপ কিস্কু বলেন, “আমি সালিশি সভায় ছিলাম না। তবে পরে বিষয়টি শুনেছি”। টিবুর দাবি অন্যায়ভাবে তাদের জমি বিক্রি করে দিয়েছে। তাই আমরা ওই টাকা ফেরত চেয়েছি।
বিজেপির বীরভূম জেলা যুব মোর্চার সভাপতি শান্তনু মণ্ডল বলেন, “আমরা বিষয়টি নিয়ে পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। পুলিশ আমাদের আশ্বাস দিয়েছে দ্রুত ঘর ছাড়াদের ঘরে ফিরিয়ে দেবে”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *