সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ১৫ ফেব্রুয়ারি: চাল পালটা চালে রীতিমত জমজমাট হয়ে উঠেছে সিঁথি কান্ড। একদিকে পুলিশের বিরুদ্ধে যেমন লক আপে রাজকুমার সাউকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ করেছিল পরিবার, এবার পালটা শিয়ালহ আদালতের অনুমতিক্রমে পুলিশ লক আপে পিটিয়ে মারার প্রধান সাক্ষী আসুরা বিবিকে ভয় পাইয়ে মিথ্যা কথা বলানো হয়েছে, এমন অভিযোগে মৃতের ছেলের বিরুদ্ধে এফআইআর করল পুলিশ।একইসঙ্গে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর মূল অভিযুক্ত এসআই সৌমেন্দ্রনাথ দাসকে জেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। থানার সিসিটিভি ফুটেজ পাঠানো হয়েছে ফরেন্সিক ল্যাবে।
নিহত ব্যবসায়ীর ছেলে বিজয় সাউয়ের বিরুদ্ধে এফআইআর করল টালা থানা। প্রত্যক্ষদর্শী আসুরা বিবি অভিযোগ করেছিলেন, তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছিলেন রাজকুমার সাউ। জোর করে বয়ান লিখিয়ে নেওয়ার অভিযোগও করেছিলেন আসুরা। তার ভিত্তিতে শুক্রবার শিয়ালদহ আদালতে এফআইআর করার অনুমতি চায় টালা থানা। সেই আবেদনে সাড়া দিয়েছেন বিচারক। ফলে এবার সিঁথি কাণ্ডে মৃত রাজকুমার সাউয়ের পরিবারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
ঘটনার পর আচমকাই দু’দিন নিখোঁজ থাকার পর বৃহস্পতিবার টালা থানায় মৃতের পরিবারের বিরুদ্ধেই অভিযোগ করেন আসুরা বিবি। আর এখানেই সাক্ষীকে অপহরণ করে ভয় পাইয়ে ছেড়ে দেওয়ার পুলিশি ষড়যন্ত্র খুঁজে পাচ্ছে মৃতের পরিবার। রাজকুমারের ছোট ছেলে বিজয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাতে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বয়ান লেখানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। শনিবার শিয়ালদা আদালতে প্রথমে কথা থাকলেও, শেষপর্যন্ত সিঁথি থানাতেই সব অফিসারদের বার করে দিয়ে আসুরা বিবির গোপন জবানবন্দি রেকর্ড করেন ম্যাজিস্ট্রেট।
এদিকে সিঁথিকাণ্ডের পর ৫ দিন কেটে গেলেও, মূল অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারকে জেরা করতে পারেননি গোয়েন্দারা। কারণ ঘটনার পর থেকেই তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। শনিবার সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান সাব ইন্সপেক্টর সৌমেন্দ্র মোহন দাস। এবার তাঁকে জেরা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তদন্তকারী অফিসাররা। ইতিমধ্যেই সিঁথি থানার সবকটি সিসিটিভির ফুটেজ বাজেয়াপ্ত করে তা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে ফরেনসিক ল্যাবে। ঘটনার পর থানার কোনও সিসিটিভি ফুটেজ বিকৃত করা হয়েছে কিনা, সেটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।