আমাদের ভারত,২৫ ফেব্রুয়ারি: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে মঙ্গলবার সকালেও উত্তপ্ত হল রাজধানী দিল্লি। সকালবেলায় মৌজপুর এবং ব্রহ্মপুরীতে আবার সংঘর্ষ বাধে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। একে অপরকে লক্ষ্য করে পাথর বৃষ্টি শুরু করে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বেশ কয়েকটি বাইক। ভাঙ্গচুর করা হয়েছে একটি ই-রিক্সা। রিক্সায় থাকা যাত্রীদের কাছ থেকে তাদের মূল্যবান জিনিস কেড়ে নেওয়া হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। সেখান থেকে উদ্ধার হয়েছে কার্তুজের খোল। এখনো পর্যন্ত ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে সংঘর্ষের ঘটনায়। এলাকায় শুরু হয়েছে ফ্ল্যাগ মার্চ।
আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হলেও থমথমে রয়েছে এলাকা। একই অবস্থা কারওয়াল নগরেও। মঙ্গলবার ভোরে একটি টায়ার কারখানায় বিক্ষোভকারীরা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে। আগুন ধরানো হয়েছে বেশকিছু গাড়িতে। কিন্তু নিরাপত্তা না থাকায় দমকল বাহিনীও সেখানে পৌঁছায়নি।
দমকল বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, ভোর তিনটে পর্যন্ত দিল্লির একাধিক এলাকা থেকে প্রায় ৪৫টি ফোন এসেছে। বিক্ষোভকারীদের হাতে তিন কর্মী আহত হয়েছেন। একটি গাড়িও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই পরিস্থিতি বুঝেই তারা এগোচ্ছেন।
সামগ্রিক পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন দিল্লি পুলিশ। পুলিশের তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে “পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে হিংসা অব্যাহত। লাগাতার অভিযোগ পাচ্ছি আমরা।”
সিএ বিরোধী ও সমর্থকদের সংঘর্ষের চরম আকার ধারণ করেছে গতকাল থেকে। রাজধানীর একাধিক মেট্রো স্টেশন বন্ধ রাখা হয়েছে। আজও সেই মেট্রো স্টেশনগুলি বন্ধ রয়েছে। উত্তর-পূর্ব দিল্লির সমস্ত সরকারি বেসরকারি স্কুল বন্ধ রয়েছে। জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা।
দিল্লির আইন-শৃঙ্খলা কেন্দ্রের হাতে। ইতিমধ্যেই লেফটেন্যান্ট গভর্নরের সঙ্গে কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। মুখ্যমন্ত্রীর জানিয়েছেন লেফটেন্যান্ট তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন। বাহিনী পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি, যাতে নতুন করে এই হিংসা না ছড়ায়।
কেজরিওয়াল টুইট করে লিখেছেন, “দিল্লির বেশ কিছু জায়গার পরিস্থিতি দেখে চিন্তিত আমি। শহরের সর্বত্র যাতে শান্তি বজায় থাকে তার জন্য একজোট হয়ে আমাদেরই নিশ্চিত করতে হবে। সকলকে আমার অনুরোধ হিংসা ত্যাগ করুন। যেখানে বিক্ষোভ হচ্ছে সেখানে বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকে বসছি আমি।” এদিকে দিল্লির পরিস্থিতি নিয়ে গতকালই পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
সিএএর সমর্থনে পাল্টা মিছিল করেছিলেন বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র। তিনি পুলিশকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন রাস্তা খালি করার।এদিকে শাহিনবাগের মত জাফরাবাদেও সিএএ বিরোধী অবস্থান শুরু হয়েছিল। এরপরই দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। দু’পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে প্রাণ গেছে এক পুলিশ কর্মী সহ ৭ জনের।এছাড়াও ১০০-র বেশি মানুষ আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।