DVC, Robbery, ডিভিসির আবাসনে দুঃসাহসিক ডাকাতি, এলাকায় আতঙ্ক

সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২৩ জানুয়ারি: সোমবার রাতে ডিভিসির এমটিপিএস কর্মী আবাসনে দুঃসাহসিক ডাকাতির ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছাড়িয়েছে মেজিয়া বিদ্যুৎ প্রকল্পের কর্মী ও আধিকারিক মহলে। এই ঘটনায় আতঙ্কিত কর্মী আবাসনের বাসিন্দারা। পাঁচিল দিয়ে ঘেরা পুরো আবাসন, ২৪ ঘন্টা নিরাপত্তার ব্যবস্থা, ২৪ ঘন্টা আবাসনে টহলদারি সত্বেও তালা ভেঙ্গে চুরি বা ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনও চিন্তিত। কর্মী আবাসনের বাসিন্দারা নিরাপত্তা রক্ষায় উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। তাদের দাবি, নিরাপত্তার ঢিলেমিতেই এই প্রথম এধরনের ঘটনা ঘটলো।

আবাসনের বাসিন্দা সমীর বাইন বলেন, এমটিপিএস স্টাফ ও অফিসার কলোনী মিলিয়ে প্রায় ১৫৫০টি ফ্ল্যাট বাড়ি রয়েছে। নিরাপত্তা কর্মীর সংখ্যাও শতাধিক। আমরা ভাবতেই পারি না কলোনীতে চুরি করার সাহস কারো হবে। তিনি বলেন, দেশের প্রত্যেক রাজ্যের কর্মীরা এই আবাসনে থাকেন। তারা বাড়ি গেলে ৭- ১০ দিন ছুটি নিয়ে নির্ভাবনায় থাকেন। এই আবাসনের কর্মী কামাক্ষ্যা ঘোষ সম্প্রতি ডিভিসির অন্ডাল প্রজেক্টে বদলি হয়েছেন। তিনি ওখানে ডিউটিতে ছিলেন। ওনার স্ত্রী ও ছেলে বিয়ে বাড়ি উপলক্ষে আত্মীয়র বাড়ি গেছেন। সেই সুযোগে তালা ভেঙ্গে চুরির ঘটনা ঘটে বলে সকালে প্রতিবেশীরা খবর পান। আজ সকালে এসে দেখেন, সব লন্ডভন্ড হয়ে পড়ে আছে। তার আলমারির লকারে তার স্ত্রী ও বিবাহিতা মেয়ের প্রায় ১৮ ভরি সোনার গয়না ছিল। কাঁসা ও পিতলের বাসন, শাড়ি ও জামাকাপড় ছিল। সেই ১৫ – ২০ হাজার নগদ টাকা সবই নিয়ে গেছে। পাশের ফ্ল্যাটের রমানাথ কুমারের বাড়ি বিহারের পাটনা। ভাইয়ের বিয়ে উপলক্ষে ৩ দিন আগে বাড়ি গেছেন। একই কায়দায় তার কোয়ার্টারেও চুরি হয়েছে। তিনি খবর পেয়ে পাটনা থেকে ফোনে যোগাযোগ করেন। তার দরজার সামনে প্রহরা বসিয়েছে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ। এরকম ৫টি বিল্ডিংয়ে হানা দিয়ে ২টি তালা ভেঙ্গে চুরি করতে সক্ষম হয়েছে
দুষ্কৃতিরা।

আবাসনের আরেক বাসিন্দা অরিন্দম ব্যানার্জি বলেন, এক একটি বিল্ডিং ৩ তলা। প্রতিটিতে ৬টি করে পরিবার থাকেন। ইদানিং বহু কর্মী অবসর নেওয়ায় অনেক কোয়ার্টার খালি। সেগুলি ঠিকাদারদের দেওয়া হচ্ছে শ্রমিক রাখার জন্য। ঠিকা কর্মীরা ২ মাস ৩ মাস পর চলে যান। তার অভিযোগ ডিভিসি কর্মীদের মাঝে এরকম প্রায় ২৫০ কোয়ার্টার ঠিকাদারদের দেওয়া আছে। নানা লোকের আনাগোনায় কর্মীদের কোয়ার্টারে রেইকি করতে সুবিধা হয়। সোমবার ছিল বাঁকুড়া জেলার এ মরসুমের শীতলতম দিন। এছাড়াও কলোনীতে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থাকায় কলোনী গেটের দুটি দরজাই প্রায় সারা রাত খোলা ছিল। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দুষ্কৃতিরা এই কাজ করেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। কামাক্ষ্যা ঘোষ পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ডিভিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে তারা পুলিশকে তদন্ত করতে বলছেন। নিরাপত্তার বিষয়টিও খতিয়ে দেখছেন তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *