আমাদের ভারত, মালদা, ৬ ফেব্রুয়ারি: বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার র্যালিতে যে এত মানুষের ভিড় হবে, তা ভাবতেই পারেনি দলের রাজ্য এবং জেলা নেতৃত্ব। শনিবার দুপুরে চোখ ধাঁধানো র্যালিতে দলীয় কর্মী সমর্থকদের ভিড় দেখে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। হুডখোলা গাড়ি থেকেই দুই হাত তুলে কখনো প্রণাম জানিয়ে, আবার কখনো গাঁদা ফুল জনতার উদ্দেশ্যে ছুঁড়ে অভিবাদন জানান তিনি। এদিন মালদা শহর থেকে রবীন্দ্র অ্যাভিনিউ এলাকা পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকায় বিজেপির র্যালি হয়। আর সেই র্যালিতে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সাংসদ খগেন মুর্মু, দলের জেলা সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র মন্ডল সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।
এদিন “আর নয় অন্যায়” কর্মসূচিকে ঘিরে শহরের ফোয়ারা মোড় থেকে শুরু করে আশেপাশের এলাকায় দলীয় কর্মী সমর্থকদের উপচেপড়া ভিড়ে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। ঢাক ঢোল, সাঁওতালি নাচের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় র্যালি। মাত্র এক ঘণ্টার এই র্যালি দেখতে রাস্তার ধারে হাজার হাজার মানুষ দাঁড়িয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে অপেক্ষা করেন। এমনকি শহরের যে রাস্তা দিয়ে বিজেপির র্যালি গিয়েছে, সেইসব এলাকার রাস্তার ধারে বাড়ির ছাদগুলিতে ছিল সাধারণ মানুষের উপচে পড়া ভিড়। এ যেন রথযাত্রা দেখার মতোন মানুষের আগ্রহ ছিল। বিজেপি জেলা নেতৃত্বের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে যে এদিনের এই র্যালিতে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছিল।
এদিনেই এই কর্মসূচি শুরুর অনেক আগে থেকেই মালদা শহরের ফোয়ারা মোড়ে একের পর এক এলাকা থেকে বিজেপির মিছিল আসতে শুরু করে। শুধু ফোয়ারা মোড় নয়, তার আশেপাশে অন্তত কয়েক কিলোমিটার এলাকা বিজেপি দলের নেতা, কর্মী, সমর্থকদের ভিড় উপচে পড়ে। বিজেপি কর্মী, সমর্থকদের সামলাতে গিয়ে রীতীমতো কালঘাম ছুটে যায় পুলিশ কর্তাদের।
এদিনের হুড খোলা জিপে করে র্যালি করার পর রবীন্দ্র মূর্তির পাদদেশে গিয়ে সমাপ্ত হয়। সেখানে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা হাতে মাইক নিয়ে বলেন, জানুয়ারি মাস থেকে কৃষক সহায়ক সুরক্ষা অভিযান শুরু করেছিলাম। প্রায় ৪০ হাজার গ্রামে এই কর্মসূচি হয়েছে। এখনো পর্যন্ত ৩৫ লক্ষ মানুষ এই প্রকল্পে জুড়েছে। বছরে তিনবার করে কেন্দ্রের মোদী সরকারের কৃষক সম্মান নিধির মাধ্যমে টাকা পাচ্ছেন কৃষকরা। কিন্তু মমতা দিদির সরকার কৃষকদের জন্য কিছুই করতে পারেনি।
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা আরও বলেন, মালদা রেশম থেকে আম চাষের জন্য বিখ্যাত। কিন্তু এখানে এসে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম যে বাংলায় তৃণমূল সরকার রেশম চাষের ক্ষেত্রে বিশেষ কোনও উন্নতি করতে পারেনি। এরকম শুনে সত্যিই খুব খারাপ লাগলো। তাই তো আমরা বলছি “আর নয় অন্যায়”। এবারে চাষিরা তাদের নিজেদের অধিকার পাবেন। কারণ, এবার বিজেপি বাংলায় সরকার গড়বে। প্রথমে চাষিদের জন্য বিস্তর সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হবে। যা কেন্দ্রের মোদী সরকার একটার পর একটা প্রকল্পে করে দিচ্ছে।
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা বলেন, আজকে যারা তৃণমূল ছাড়ছেন তারাই বলছেন ওই দলটা হচ্ছে দুর্নীতি এবং কাটমানির দল। গরু পাচার হোক অথবা কয়লা কান্ড সবই এখন ধীরে ধীরে প্রকাশ পাচ্ছে। আসলে ঝুলি থেকে বেড়াল বেরিয়েছে। তাই “আর নয় অন্যায়”। এবারে বিজেপি ২০০’র বেশি আসন নিয়ে বাংলায় সরকার গড়বে।