স্নেহাশীষ মুখার্জি, নদিয়া, ২২ নভেম্বর:
রোগী ভর্তির সময় করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ, মৃত্যুর পর আবার সেই রোগীর রিপোর্ট আসে পজিটিভ। কিন্তু ইতিমধ্যেই মৃতদেহের সংস্পর্শে আসেন পরিবারের সদস্যরা। হাসপাতালের গাফিলতির অভিযোগ তুলে শনিবার ধুন্ধুমার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় হাসপাতাল চত্বরে। চলে বিক্ষোভ। পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধানের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দীর্ঘক্ষণ বচসা চলে।
জানাগেছে, মৃত যুবকের নাম অরূপ ঘোষ (৩৬), বাড়ি তেহট্ট বর্গীডাঙ্গা পাড়া। মৃত ওই যুবক তেহট্ট গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মী ছিলেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছুদিন ধরে শারীরিক সমস্যা থাকায় শনিবার অরূপ ঘোষ নামে ওই যুবককে তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রবিবার সকালে তাকে শক্তিনগর স্থানান্তরিত করার নির্দেশ দেন চিকিৎসক। শক্তিনগরে যেতে গিয়ে মাঝপথে মারা যান ওই যুবক। ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয় তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে। হাসপাতালে আনতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃতের পরিবার সহ আত্মীয়-স্বজনরা। চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ তোলেন। তার সাথে আরো একবার করোনা পরীক্ষা করার দাবি তোলেন। পরিবারের দাবির ভিত্তিতে করোনা পরীক্ষা করা হলে রিপোর্ট আসে পজিটিভ। কিন্তু ততক্ষণে পরিবারের সকল সদস্য ওই যুবকের সংস্পর্শে চলে এসেছেন।
পরিবারের অভিযোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণেই আজ ওই পরিবারের অধিকাংশ মানুষকে করোনা সংক্রমনের আশংকা থাকতে হচ্ছে।
কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটলো তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে গেলে প্রধান, উপপ্রধানকে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন এমার্জেন্সিতে থাকা নার্সরা। এই ঘটনাকে ঘিরে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের শুরু হয় বচসা। পঞ্চায়েত প্রধান মুক্তি হালদার বলেন, হাসপাতালের গাফিলতির জন্য আমাদের পঞ্চায়েত কর্মীকে মারা যেতে হয়েছে। সঠিকভাবে চিকিৎসা করা হয়নি অরূপের। সে কথা জানাতে গেলেও আমাদের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট বাজে ব্যবহার করে। এ বিষয়ে উপপ্রধান চায়না মন্ডল খান বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া রিপোর্টে করোনা নেগেটিভ থাকার কারণেই পরিবারের সদস্যরা মৃত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসে। তারপরে আবার পরীক্ষা করানো হলে পজেটিভ আসে। এই ধরনের অসচেতন কাজ কর্মের জন্যই বিষয়টি জানতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা যাই। জানতে গেলে এমার্জেন্সিতে থাকা নার্সরা আমাদের ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন।