আমাদের ভারত, ২৬ নভেম্বর: করোনার প্রভাব পড়ছে চোখেও। ঝাপসা হচ্ছে দৃষ্টিশক্তি। ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে রেটিনা। বেশ কয়েকজন রোগীর মধ্যে এমন উপসর্গ দেখা যাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। এমনকি সংক্রমণ সারিয়ে ওঠার পরে ছানি পড়ার মতো রোগ হচ্ছে চোখে।
ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে দৃষ্টি। কারুর ক্ষেত্রে রেটিনাতেও প্রভাব পড়ছে, ফলে দৃষ্টি চলে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। ফলে করোনার মধ্যে মারণ ভাইরাসের সংক্রমণে আর কি কি রোগ হতে পারে তা নিয়েই চিন্তিত গবেষকরা। এতদিন জানা গিয়েছিল সংক্রমণ শরীরে ছড়ালে নাকের গন্ধ নেওয়ার ক্ষমতা চলে যাবে মুখের স্বাদ থাকবে না। এখন জানা যাচ্ছে ভাইরাস এমনভাবে শিরা ধমনী গুলোকে আক্রমণ করছে যে সারা শরীরে রক্ত চলাচল ঠিকমত হচ্ছে না। যার ফলে রক্ত জমাট বাঁধছে। হৃদপিন্ডে রক্ত জমে হার্টের রোগ হচ্ছে। কখনো মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌঁছানো বন্ধ হওয়ায় মস্তিষ্কের রোগ দেখা দিচ্ছে। আর এসব কিছুর প্রভাব পড়ছে চোখেও।
নানা জায়গা থেকে খবর পাওয়া গেছে করোনা সংক্রমনের কারণে চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হচ্ছে। আমেদাবাদের এক রোগী জানিয়েছেন তার চোখে কালো কালো স্পট পড়েছিল। পরীক্ষা করাতে গিয়ে ধরা পড়ে তিনি কোভিড পজেটিভ। ধীরে ধীরে তার দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যায়। পরে তাকে অপারেশন করাতে হয়। অন্য আরেক রোগী একই সমস্যার কথা বলেছেন। করোনা সংক্রমণে তার ৮০% দৃষ্টি চলে গিয়েছিল।
চিকিৎসকরা বলছেন বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে যে, করোনার কারণেই এমন রোগ হচ্ছে কিনা তা বোঝার চেষ্টা চলছে।
এইমসের চিকিৎসক হরজিৎ সিং বলেছেন কোভিড সংক্রমণে দু’ভাবে প্রভাব ফেলছে চোখে। এক, চোখের পেশি দুর্বল হচ্ছে ফলে সাময়িকভাবে দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হচ্ছে। অনেকের ক্ষেত্রে করোনা থেকে সেরে ওঠার পরে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তবে সংক্রমণ যখন সেড়ে যাচ্ছে পুরোপুরি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ছে তখন আবার দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক হচ্ছে।
দ্বিতীয় সমস্যা চোখের রেটিনা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে পুরোপুরি দৃষ্টিশক্তি চলে যাচ্ছে। রক্ত জমাট বাঁধার কারণে এই সমস্যা হচ্ছে। শিরা ও ধমনীতে এমনভাবে রক্ত জমাট বাঁধছে যে রক্ত সঞ্চালন বাধা পাচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে চোখে।
কর্ণাটকের এক চিকিৎসক বলেছেন, করোনা থেকে সেরে ওঠার সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে অনেক রোগী চোখের সমস্যা নিয়ে তাদের কাছে এসেছেন। তাদের কনজাংটিভাইটিস এর মত উপসর্গ দেখা দিয়েছে। তাদের চোখ লাল হয়েছে সঙ্গে জ্বালা ব্যথা চুলকানি। চোখ ফুলে যাচ্ছে জল পড়ছে এমন কি চোখে স্নায়ুর অনুভূতি চলে যাচ্ছে। চোখেও প্যারালাইসিস হচ্ছে।