“নির্দল কাউন্সিলরকে হারানোর জন্য পুলিশ থেকে শুরু করে অনেক চক্রান্ত করেছিল তৃণমূল,” দলের বিরুদ্ধে পুরপ্রধান সৌমেন খানের মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক

পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৭ ফেব্রুয়ারি: তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্য সভায় মন্তব্য তৃণমূলেরই পুরপ্রধান সৌমেন খানের। গত রবিবার মেদিনীপুর পুরসভার ১৪ নং ওয়ার্ডের তালপুকুর এলাকায় একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সৌমেন খান বলেন, এই ওয়ার্ডের নির্দল কাউন্সিলর অর্পিতা রায় নায়েককে হারানোর জন্য পুলিশ থেকে শুরু করে অনেক রকম চক্রান্ত করেছিল তৃণমূল। শুধুমাত্র আপনারা পাশে থেকে অর্পিতাকে রক্ষা করেছেন। তৃণমূল প্রার্থী সংঘমিত্রা পালকে জেতানোর জন্য পুলিশকে কাজে লাগিয়ে, বাইরে থেকে মস্তান নিয়ে এসে, মা বোনেদের ভয় দেখিয়েছিল, কিন্তু তাতেও অর্পিতা রায় নায়েককে হারাতে পারেনি। তৃণমূলের পুরপ্রধানের মুখে তৃণমূল প্রার্থী, দল ও পুলিশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য নিয়ে আবার মেদিনীপুর শহর জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক।

প্রসঙ্গত, গত পৌর নির্বাচনে ১৪ নং ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী করেছিল সংঘমিত্রা পালকে। সেই সময় দলেরই প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন অর্পিতা রায় নায়েক। এরপরই দলের শীর্ষ নেতৃত্ব অর্পিতা রায় নায়েক ও তার স্বামী প্রাক্তন কাউন্সিলর বিশ্বেশ্বর নায়েককে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করে দল থেকে।

অন্যদিকে মেদিনীপুর পুরসভার পুরপ্রধান সৌমেন খানের প্রকাশ্যে এই মন্তব্য নিয়ে সরাসরি আন্দোলনে নেমেছে ১৪ নং ওয়ার্ড তৃণমূল। এই নিয়ে ওয়ার্ডের তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা পৌরপ্রধানের মন্তব্যের বিরুদ্ধে ধিক্কার মিছিল সংগঠিত করে।‌ এই ধিক্কার মিছিলে উপস্থিত ছিলেন শহর সভাপতি তথা কাউন্সিলর বিশ্বনাথ পান্ডব, মহিলা সভানেত্রী তথা কাউন্সিলর মৌ রায়, কাউন্সিলর লিপি বিশুই, কাউন্সিলর ডাঃ গোলোক মাঝি, মোজাম্মেল হোসেন, সত্য পড়িয়া সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

অন্যদিকে পুরপ্রধান সৌমেন খানের এই মন্তব্যের পর ১৪ নং ওয়ার্ডের সহ সভাপতি বরুন সাউ জানান, মেদিনীপুরে এই পৌর নির্বাচনে আমাদের ওয়ার্ডে কোনোদিন কোথাও সন্ত্রাস হয়নি, যতগুলি নির্বাচন হয়েছে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। তিনি আরও বলেন, যে আমদের পুরপ্রধান তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়া কাউন্সিলর অর্পিতা রায় নায়েককে পাশে বসিয়ে দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছেন, তৃণমূল কর্মীদের গুন্ডা মস্তান বলেছেন। উনি কোন দল করেন, উনি সেটা পরিষ্কার করুক।‌ আর আমরা যদি গুন্ডা হ‌ই, তাহলে উনি ও সেই দলের চেয়ারম্যান, উনি পদত্যাগ করুন। উনিও কি নিজের ওয়ার্ড গুন্ডা নিয়ে জিতেছেন। নির্বাচনে দলকে হারানোর পেছনে যে দলেরই একাংশ ছিলেন, সেটা উনি পরিস্কার করে দিয়েছেন যে কারা ছিল। আমরা উনার এই মন্তব্যের জন্য দলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

অন্যদিকে বিজেপির জেলা মুখপাত্র অরূপ দাস বলেন, পৌরসভা ভোটের আগে দাবি করেছিলাম পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা নানাভাবে বিরোধী দলের প্রার্থীদের ভয় দেখানো, বুথজ্যাম করার চেষ্টা করছিল। আজ তৃণমূলের পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান আমাদের কথাতেই শিলমোহর দিয়েছে। উনি যদি মনে করেন উনার দল গুন্ডা মস্তানদের দল‌ তাহলে ইস্তফা দিন চেয়ারম্যান পদ থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *