আমাদের ভারত, ব্যারাকপুর, ১১ মার্চ: বেলঘড়িয়া শুট-আউটের ঘটনা নিয়ে তৃণমূলের মধ্যেই শুরু হয়েছে দ্বন্দ্ব। তৃণমূল সাংসদ ও চেয়ারম্যান দু’জনের দু’রকম বক্তব্যেই সেই দ্বন্দ্ব স্পষ্ট।
বেলঘড়িয়া শুট-আউটের ঘটনা নিয়ে তৃণমূলের মধ্যেই শুরু হয়েছে দ্বন্দ্ব। সাংসদ এটাকে নিছক দুষ্কৃতী দৌরাত্ম ও ব্যক্তিগত শত্রুতা বললেও তৃণমূলের পৌর প্রধান- এর পেছনে টেক্স ম্যাকো কারখানার বরাত সংক্রান্ত বিষয়ে ঝামেলাকে দায়ী করেছেন।
এদিন প্রাক দোল উৎসব উপলক্ষে বেলঘরিয়ায় এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। বেলঘরিয়ায় ঘটে যাওয়া শুট আউটের ঘটনায় জখম হয়েছেন এক তৃণমূল কর্মী সহ এক সাধারণ ব্যক্তি। আর এই গুলি চালনার ঘটনার পর থেকেই নিজে খুন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় কাউন্সিলর। কারণ আহত তৃণমূল কর্মী কাউন্সিলর অনুগামী বলেই পরিচিত। তাই এই ঘটনার পেছনে অনেকেই তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বকে দায়ী করলেও তা মানতে নারাজ সাংসদ সৌগত রায়। এই শুট আউটের ঘটনাকে নিছক বিক্ষিপ্ত ঘটনা বলে
বর্ণনা দিলেন সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলেন, “স্থানীয় কাউন্সিলর নির্মলা রায় আমাকে ফোন করেছিল গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির চিকিৎসার জন্য। তবে ও কেন আতঙ্কে ভুগছে জানি না। তবে ওর কথায় গুরুত্ব দিতে চাই না। ও দলের কাউন্সিলর। পুলিশের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। এটা ব্যক্তিগত ঝামেলা বলেই পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। তার জেরেই এই গুলির ঘটনা। এই ঘটনার আমি নিন্দা করছি। এখানে পুলিশের গাফিলতির কোনো ব্যাপার নেই।
খড়দহ থেকে এসে গুলি করেছে দুষ্কৃতীরা। এটা একটা বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে। আমি পুলিশকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছি। পুলিশ তৎপর হয়ে কাজ শুরু করেছে। আইন শৃঙ্খলার অবনতির কোনো ঘটনা এটা নয়।” তবে টেক্স ম্যাকোতে ইউনিয়নের দখল নেওয়া বা কারখানার বরাত নেওয়াকে কেন্দ্রে করে এই গুলি চলেছে বলে মনে করছেন না সৌগত রায়।
কিন্তু কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহার দাবি, কারখানার বরাত পাওয়া সংক্রান্ত কোনো ঝামেলার জন্যই এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তিনি এদিন জানান, কাউন্সিলর ঘনিষ্ঠ ছিলো বিকাশ সিং। তবে এই ঘটনা নিয়ে কাউন্সিলরের প্রাণ নাশের ভয় আছে বলে আমার জানা নেই। কারণ কাউন্সিলরও কিছু বলেননি। তবে তিনি খুন হয়ে যেতে পারেন এই কথা আমি বিশ্বাস করি না। বেলঘরিয়ার টেক্স ম্যাকো কারখানায় টেন্ডার সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে বিকাশ সিং- এর সঙ্গে কারোর গণ্ডগোল হয়ে থাকতে পারে। যদি সেটা হয়ে থাকে তাহলে সেটা অনেকটা ছোট ও সামান্য বিষয়। তার জন্য গুলি চলতে পারে বলে মনে হয় না। পুলিশ তদন্ত করছে দেখা যাক।”
এই শুট আউটের ঘটনার কিনারা করতে জোর কদমে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। সেই মত পুলিশ ঘটনাস্থলে দুষ্কৃতীদের ফেলে যাওয়া বাইকটির মালিকের খোঁজ পায়। ভিকি যাদব নামে এক ব্যক্তি ওই বাইকের মালিক বলে জানতে পারেন পুলিশ। সেই মত ভিকি যাদবকে রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করে সোমবার সকালে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যদিও এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ইন্দাল যাদবের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।