আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ১৬ জুলাই: পাট্টা জমি দখল করে ভোগদখলের চেষ্টা। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরকে অভিযোগের তদন্তের নির্দেশ দিলেও বিভাগীয় দফতর চোখ বুঁজে আছে। এদিকে পঞ্চায়েতের নির্দেশকে গুরুত্ব না দিয়ে পাট্টা জমি তড়িঘড়ি ঘিরে ফেলার চেষ্টা চলছে। বড়শাল পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের স্বামী পবন মাল বলেন, আমরা নিষেধ করেছি। কিন্তু কথা শুনছে না।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে তোয়াক্কা না করেই দিনের পর দিন চলছে জমি দখলদারি। সেই তালিকায় এবার যোগ হল বীরভূমের রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লকের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার নাম। তারাপীঠ যাওয়ার পথে বড়শাল পঞ্চায়েতের অধীন মধ্যগোপালপুর মৌজায় ২৬৭ নম্বর দাগে রাস্তার ধারে আট কাঠা পরিমাণ সরকারি খাস জমি রয়েছে। যার বর্তমান মূল্য এক কোটি টাকা। সেই জায়গা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের যোগ সাজসে পাট্টাদারকে উচ্ছেদ করে রদিপুর গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ ঘোষ নামে এক ব্যক্তি নিজের নামে নথিভুক্ত করিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ। রামপুরহাট মহকুমা পথ ও পরিবেশ সঙ্ঘের সহ সভাপতি শেখর সিনহা বলেন, এভাবে সরকারি খাস জায়গা, বিশেষ করে অন্যের পাট্টা জমি নিজের নামে রেকর্ড করা যায় না। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি কাজ।
এব্যাপারে মহকুমা শাসক সৌরভ পাণ্ডেকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা সাঁকিরপুর নিবাসী সুনীল মণ্ডল বলেন,
আমাদের কোনো কথা না শুনে লোকজন নিয়ে এসে জোর করে পাঁচিল তুলছেন বিশ্বজিৎ ঘোষ। এই জমির পিছনে আমাদের জমি রয়েছে। কোনো রাস্তা ছাড়ছে না। আমাদের চাষ বন্ধ হয়ে যাবে। খাস জমিকে কী করে নিজের নামে করা যায়, আমরা বুঝতে পারছি না। পঞ্চায়েতকে জানিয়েছি। তাদের কথাও শুনছে না।
রাহুল সাহা বলেন, লক্ষাধিক টাকার দুর্নীতিতে নিজের নামে নথিভুক্ত করে জবর দখল করছেন বিশ্বজিৎ ঘোষ নামে এক ব্যক্তি। আমরা বিষয়টি রামপুরহাট ১ ব্লকের
বিএলআরও দফতরের পাশাপাশি রামপুরহাট মহকুমা শাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। তারপরও বিশ্বজিৎ ঘোষ জমিতে ডাস্ট ভরে চারিদিকে ইঁটের পাঁচিল তুলছেন।
জানা গেছে, প্রায় ৩৫ বছর আগে রাজ্য সরকার বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যগোপালপুর মৌজায় প্রয়াত ফটিক বাউড়ির নামে ওই আট কাঠা জমির পাট্টা দিয়েছিল। বর্তমানে ফটিক বাউড়ির চার মেয়ের বিয়ে হওয়ায় অন্যত্র বাস করছেন। সেই সুবাদে পাট্টাদারকে উচ্ছেদ করে রামপুরহাট থানার রদিপুরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ ঘোষ প্রচুর অর্থের বিনিময়ে ওই জমি নিজের নামে করিয়ে নেন।
এবিষয়ে বিশ্বজিৎ ঘোষকে ফোন করলে তিনি কথা বলতে অস্বীকার করেন।
জেলা শাসক বিধান রায় বলেন, “সরকারি জায়গা দখল করা যায় না। বে-আইনি দখলদার সরিয়ে দেওয়া হবে।