বাদ পড়ল না শিশুদের খাবারও! মিড-ডে মিলে ৬ মাসেই ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে রাজ্যে, বলল কেন্দ্রের রিপোর্ট

আমাদের ভারত, ১২ এপ্রিল: প্রায় প্রতিদিনই দুর্নীতি সংক্রান্ত নানা অভিযোগ নিয়ে তদন্ত চলছে রাজ্যে। সেই দুর্নীতির তালিকা থেকে বাদ পড়ল না শিশুদের খাবারও। বেশ কিছুদিন ধরেই বিরোধীরা মিড ডে মিল নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করে আসছিলেন। তার মধ্যেই কেন্দ্র থেকে পর্যবেক্ষণ দল এসে পরিস্থিতি
সরেজমিনে খতিয়ে দেখে গিয়েছিল। এবার কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের রিপোর্টে রাজ্য রাজনীতিতে ঝড় উঠলো। গত বছরে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে মিড ডে মিলের ভুল সংখ্যা দেখিয়ে কারচুপি করা হয়েছে বলে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। অর্থাৎ যত সংখ্যক মিড ডে মিল পরিবেশন করা হয়েছে তার থেকে বেশি সংখ্যা দেখানো হয়েছে খাতায়-কলমে। এভাবে গত বছরে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে অন্তত ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই দাবি করেছে, মাত্র ৬ মাসে কেন্দ্রীয় প্রকল্প মিড ডে মিলের ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে রাজ্যে। পিএম পোষন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত প্যানেল গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রক। সেই প্যানেলের পেশ করা রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, গত অর্থ বর্ষের প্রথম দুই ত্রৈমাসিকে ১৪০ কোটি ২৫ লক্ষ মিড ডে মিল পরিবেশনের দাবি করেছে রাজ্য সরকার, কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে ১২৪ কোটি ২২ লক্ষ মিড ডে মিল পরিবেশন করা হয়েছে। এছাড়াও নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে ৭০% কম খাবার পড়ুয়াদের সরবরাহ করা হয়েছে বলেও রিপোর্টে অভিযোগ করা হয়েছে।

বিষয়টি সামনে আসতেই রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। টুইটারে তিনি লিখেছেন, যেকোনো জনকল্যাণ মূলক প্রকল্পে আঁচড় দিলেই তৃণমূলের কেলেঙ্কারি বেড়িয়ে আসে। অন্যদিকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী টুইট করে লেখেন, “আগেই বলেছিলাম, শিক্ষা মন্ত্রকের জয়েন্ট রিভিউ রিপোর্টে ১৬ কোটি মিড ডে মিল বাবদ ১০০ কোটির দুর্নীতির অভিযোগ। ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর ৬ মাসে দুর্নীতি হয়েছে।” এদিকে রাজ্য সরকারের সবচেয়ে বড় দুর্নীতি বলে উল্লেখ করেছেন শুভেন্দু। তিনি জানিয়েছেন, এই দুর্নীতির কথা জানিয়ে তিনি আগেই কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে চিঠি দিয়েছিলেন।

এর আগে কলকাতা পৌরসভার অডিটেও মিড ডে মিলের হিসেবে গড়মিল দেখা গিয়েছিল। কলকাতা পুরসভার অভ্যন্তরীণ অডিট রিপোর্টে স্কুলগুলির মিড ডে মিলের খরচে অসামঞ্জস্য ধরা পড়ে। গত ৩০শে মার্চ সেই রিপোর্টে দাবি করা হয়, ২০১৮-১৯ ও ২০১৯ -২৯ অর্থ বর্ষের মিড ডে মিল পরিচালনার জন্য বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে তা অতিরিক্ত। এবার কেন্দ্রের রিপোর্টেও সার্বিকভাবে গোটা বাংলার দুর্নীতি প্রকাশ্যে এলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *