আমাদের ভারত, ১৮ নভেম্বর: বেলডাঙার ঘটনায় গতকাল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের তরফ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে দাবি করা হয়েছে, দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে সেখানে, তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। পাশাপাশি সংঘর্ষ নিয়ে গুজব রটানোর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করেছে পুলিশ। কিন্তু এই পোস্টের প্রেক্ষিতে পুলিশকে পাল্টা প্রশ্ন করে আক্রমণ শানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে তিনি পুলিশকে বলেছেন, সৎ সাহস থাকলে হামলাকারীদের পরিচয় প্রকাশ্যে আনুন।
নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে পুলিশের উদ্দেশ্যে শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন, যে দুই গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়িয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ, তাদের পরিচয় প্রকাশ করার সৎ সাহস আছে কি? কোন নিন্দনীয় দুষ্টুমির কথা এখানে বলা হচ্ছে? আরও একটা কথা, সংঘর্ষ অর্থাৎ দুই পার্টি একে অপরের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক আক্রমণ করে। তবে বেলডাঙ্গায় তো একটি নির্দিষ্ট পার্টি অপর গোষ্ঠীর ওপর হামলা চালিয়ে গিয়েছে। সেই একটাই গোষ্ঠী দাঙ্গা চালিয়েছে, হামলা করেছে।ভাঙ্গচুর করেছে, আগুন ধরিয়েছে হিন্দুদের বাড়ি এবং সম্পত্তিতে। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ এবং মুর্শিদাবাদের এসপির উদ্দেশ্যে আমাদের প্রশ্ন, আপনারা দাবি করেছেন যে কেউ নিহত হয়নি। তাই আপনারা সফল, কিন্তু লুটপাট এবং ভাঙ্গচুরের যে ঘটনা ঘটেছে তার কী হবে? যাদের আপনারা রক্ষা করতে ব্যর্থ হলেন তাদের কী হবে ?
এরপর শুভেন্দু অধিকারী আরো লিখেছেন, মনে হচ্ছে আপনারা অপপ্রচারকারীদের নিয়েই বেশি চিন্তিত। তবে যারা ভাঙ্গচুর চালালো, যারা আইন ভাঙল, যারা দাঙ্গা করলো, তাদের বিষয়ে আপনারা নরম। এবার নিন্দনীয় দুষ্টুমির বিষয়ে আসা যাক। কেউ যদি অপরাধ করে থাকে তাহলে কেউ তাদের রক্ষা করতে চায় না। তাদের আইনত উচিত সাজা দেওয়া। দাঙ্গাবাজদের ইচ্ছেমতো সাজা হতে পারে না। তদন্ত না করে নিন্দনীয় কাজের কথা বলবেন না। আমরা সবাই দেখেছি গত বছর বাংলাদেশে কি হয়েছে। সেই সময় সেখানে এই ধরনের দুষ্টুমি করেই একাধিক মন্ডপে ভাঙ্গচুর চালানো হয়েছিল। তবে যখন সত্যিটা সামনে এলো তখন দেখা গেল সনাতনীদের বদনাম করতে ইচ্ছে করে সেই সব ঘটানো হয়েছিল। তাই এখানেও এমনটাই হতে পারে।
এছাড়াও একজন ব্যক্তির ভিডিও পোস্ট করে শুভেন্দু অধিকারী লেখেন, আমি অনুরোধ করব হিন্দুদের বিরুদ্ধে হিংসার উস্কানি দেওয়া এই ব্যক্তিকে যেনো গ্রেফতার করা হয়। তিনি আবার মানুষ খুন করারও হুমকি দিচ্ছেন।
উল্লেখ্য, এর আগে রবিবার পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের তরফে বলা হয়েছিল, মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় গতরাতে যে ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে কয়েকটি অংশের তরফে ভুল তথ্য ও গুজব ছড়ানো যে বিদ্বেষপূর্ণ প্রচেষ্টা চলেছে তা নিন্দনীয়। বেলডাঙায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। যেখানে সেই ঘটনা ঘটেছে সেখানকার কমিটির সভাপতি এবং সম্পাদককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ১৭ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে ভাঙ্গচুর ও হিংসার ঘটনায়। পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ করেছে। জেলার কোথাও কোনো প্রাণহানি হয়নি। ছয় জন আহত হয়েছেন, তাদের উপযুক্ত চিকিৎসা হচ্ছে। যারা আহত হয়েছেন তাদের সকলের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।পুলিশ কড়া নজর রেখেছে।