সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ১১ জুলাই: বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের বেহাল দশা দূর করতে ও সুষ্ঠু পরিষেবার দাবিতে আজ বিজেপি বড়জোড়া মন্ডলের উদ্যোগে বিক্ষোভ দেখানো হয় ও হাসপাতাল সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
বিজেপির বড়জোড়া মন্ডল সভাপতি গোবিন্দ ঘোষ অভিযোগ করে বলেন, সরকারি হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষার নামে রোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে। আউটডোরে রোগীর লম্বা লাইন পড়ে যায়। রোদের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন রোগী এবং তাদের আত্মীয়রা। কিন্তু সময়মতো ডাক্তারবাবুরা আউটডোরে আসেন না। তার অভিযোগ, হাসপাতালে পরিকাঠামোর অভাব নেই। কিন্তু প্রয়োজনীয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। ফলে সমস্ত স্বাস্থ্য পরিষেবা একেবারে ভেঙে পড়েছে।
বিজেপির যুব নেতা সোমনাথ কর বলেন, আমরা বিরোধী দল হিসেবে বলছি না, বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে স্থানীয়দের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তিনি বলেন দায়িত্বশীল বিরোধী হিসেবে স্থানীয়দের দাবিগুলি নিয়ে আমরা বিক্ষোভে নামতে বাধ্য হয়েছি। তিনি বলেন, নামে সুপার স্পেশালিটি হলেও কোনো সুপার স্পেশালিটি চিকিৎসক নেই হাসপাতালে। রাতে চিকিৎসকের অভাবে মাঝেমধ্যে প্রাথমিক চিকিৎসাটুকুও মেলে না। দুর্গন্ধে শৌচাগারগুলিতে যাওয়া যায় না। ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গির আঁতুড়ঘর হয়ে আউটডোরের সামনেই জমে রয়েছে নর্দমার জল। বার বার এই অব্যবস্থাগুলি সমাধানে দাবিতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও কোনো লাভ হয়নি। হাসপাতালের এই অব্যবস্থার জন্য বিজেপির স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান অলোক মুখার্জিকেই দায়ী করছেন বিজেপি নেতারা।
তৃণমূল বিধায়ক অলক মুখার্জি অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, বিজেপির কুচুটেপনা করা স্বভাব। নয়ের দশক থেকে বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলে অসংখ্য কারখানা তৈরি হলেও মান্ধতা আমলের ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কী অবস্থা ছিল এখনকার বিজেপি নেতারা তা জানেন। তখন মাথা ধরার ট্যাবলেটও পাওয়া যেত না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই দুঃসহ যন্ত্রণা থেকে গরিব মানুষকে পরিষেবা দিতে এতবড় হাসপাতাল দিয়েছে। কোভিড পরিস্থিতিতে এই হাসপাতাল যে পরিষেবা দিয়েছে তা ইতিহাস মনে রাখবে বলে দাবি করেন অলক মুখার্জি।
বিজেপির ডেপুটেশনে ৯ দফা দাবিতে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এবিষয়ে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সোমনাথ নন্দী বলেন, আমাকে সদ্য সুপার হিসেবে অ্যাডিশনাল দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ডাক্তারের যে অভাব রয়েছে তা স্বীকার করে নিয়ে তিনি বলেন, বেশ কয়েকটি দাবি দ্রুত সমাধানের জন্য রাজ্য স্বাস্থ্য ভবনে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ফের এই দাবিগুলি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত সমাধানের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হবে।