আমাদের ভারত, ব্যারাকপুর, ১৫ জুলাই: রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ নৈহাটি বিধানসভার অন্তর্গত হালিশহরের জেটিয়া পঞ্চায়েতের এক প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্যা। গত এক মাসের বেশি সময় ধরে তিনি নিখোঁজ। পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ, কোনও পাচারচক্রের হাতে পড়েছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁর স্বামী। কারণ, লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে তিনি তাঁর স্বামী বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তারপর থেকে একের পর এক হুমকি ফোনও পেয়েছেন।
হালিশহর জেঠিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের দশ বছরের প্রাক্তন সদস্যা নমিতা দাশগুপ্ত গত ৮ জুন থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে গেছেন বলে পরিবারে অভিযোগ। তাঁর বাড়ি হালিশহর থানার বরেন্দ্রগলি মেইন রোডে। জানাগেছে, বছর ৩৮-এর নমিতা দাশগুপ্ত গত ৫ ই জুন লোন আনতে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেড়িয়েছিলেন। সকাল ১০.৩৫টা নাগাদ তিনি টোটো করে বালিভাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এরপর টোটো করে কল্যাণী হাসপাতালের কাছে পৌঁছন। তারপর থেকে তাঁর আর কোনও হদিস মিলছে না বলে দাবি পরিবারের।
ওইদিন বেলার দিকে পরিবারের লোকেরা ফোন করলে দেখেন মোবাইল সুইচ অফ। তাঁর আত্মীয়রা ওই টোটো চালককে খুঁজে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জানা যায়, কল্যাণী জেএনএম হাসপাতাল সংলগ্ন গোলপার্ক জলের ট্যাঙ্কের সামনে নমিতাদেবী নেমে যান। কিন্তু তারপর থেকে আর কোনও খোঁজ নেই তার।
দু’দিন বাদে হালিশহর থানায় নমিতা দেবীর ছেলে সৌভিক দাশগুপ্ত তার মায়ের নিখোঁজ ডায়েরি করেন। এরপর সৌভিক দাশগুপ্ত ফের হালিশহর থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। নমিতা দেবীর কোনও খোঁজ না মেলায় উদ্বিগ্ন তাঁর পরিবার। পরিবারের আশঙ্কা তাকে অপহরণ করে পাচার করে দেওয়া হতে পারে বা কিডনির জন্য কোথাও গুম করা হয়ে থাকতে পারে।
নমিতা দেবীর স্বামী রানা দাশগুপ্ত বলেন, “আমার স্ত্রী এক কাপড়ে শুধু হাতে ফোন নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছে। যাওয়ার আগে সে লোন পাওয়ার জন্য যাচ্ছে বলেছিল কিন্তু তারপর থেকে আর কোনও খোঁজ নেই। পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মোবাইলের কল লিস্ট খতিয়ে দেখে তদন্ত করছে। কিন্তু একমাস হয়ে গেলেও কোন খোজ মেলেনি সে কোথায় কি অবস্থায় আছে বা আদৌ বেঁচে আছে কি না সেই নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আশঙ্কা করছি লোনের টোপ দেখিয়ে কোনও পাচারকারি নিয়ে যেতে পারে হয়তো। এখন তো কত ধরনের চক্র চলছে।”
নমিতা দেবী ও তাঁর স্বামী রানা দাশগুপ্ত লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। স্ত্রী নিখোঁজে রানা দাশগুপ্ত রাজনৈতিক প্রতিহিংসাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না। এই সম্পর্কে রানা দাশগুপ্ত বলেন, “ভোটের ফল প্রকাশের দিন থেকে নিজের ও স্ত্রী নমিতার মোবাইলে একাধিক হুমকি আসে। তবুও ও সাহস করে বাড়িতে থাকতাম। কিন্তু ভোটের ফল বেরোনোর পর পর বাড়ির লোকদের বলে কল্যাণীতে যায়। ১১.৪৫টা নাগাদ ওর ফোন বন্ধ হয়ে যায়। ওইদিন থেকে পুলিশের সহযোগিতায় চারিদিকে খোজাখুজি করেও আজ পর্যন্ত সন্ধান মেলেনি।”