শ্রীরূপা চক্রবর্তী, আমাদের ভারত, ৩১ মে : ২০২১-এ বাংলায় নিরঙ্কুশ ক্ষমতা দখল করবে বিজেপি। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী তথা বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।
গত লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি বলেছিল ১৯-এ হাফ ২১-এ সাফ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিজেপির চানক্যের বর্তমান দাবির মধ্যে সেই প্রত্যয়ের সুরই শোনা গেল আবার।
অমিত শাহ বলেন, “২০২১ সালে বাংলায় নির্বাচন হলে সেখানে আমরা পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসব। বাংলায় রাজনৈতিক হিংসা প্রতিদিন বাড়ছে। পরিস্থিতি বদলাতে চাইছে মানুষ। তারা চাইছে বিজেপি ক্ষমতায় আসুক।”
বিজেপি চাণক্যের দাবি, শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয় বিহারেও ক্ষমতায় আসবে বিজেপি।
তৃণমূলের নাম না করে তিনি বলেন, “বাংলায় রাজনৈতিক হিংসা বাড়ছে। কোনও কোনও রাজনৈতিক দল হিংসায় মদত জোগাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বদল আসা দরকার।” একই ইস্যুতে কেরল সরকারকেও তুলোধোনা করেছেন তিনি। তাঁর কথায় রাজনৈতিক হিংসা দুই রাজ্যকে পিছিয়ে দিচ্ছে। উন্নয়নের অন্যতম প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে হিংসা। আর এই পরিস্থিতি বদলে উন্নয়ন চাইছে মানুষ। বাংলার মানুষ চাইছে বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় আসুক।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করোনা স্পেশাল মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন অমিত শাহ। তার কথায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য আসলে বিভিন্ন রাজ্যে থাকা বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের অসম্মান করা। যারা দেশের উন্নয়নের কাজে হাত লাগাচ্ছেন, তাদের অপমান করা হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্য সসম্মানে তাদের শ্রমিকদের ফিরিয়ে নিয়ে আসছে, দায়িত্ব নিচ্ছে, কিন্তু বাংলা অপমান করছে তাদের।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ১৯ এর নির্বাচনেই রাজ্যে অনেকটা পথ এগিয়েছে বিজেপি। ১৮টা আসন তাদের দখলে। এবার রাজ্যের ক্ষমতা দখলে ইতিমধ্যেই আঁটঘাট বেধে নেমে পড়েছেন বিজেপির কর্মীরা। করোনা আবহে প্রকাশ্যে জনসভা করতে না পারলেও ভার্চুয়াল জনসভা করার প্রস্তুতি নিয়েছে তারা। প্রতিনিয়ত মানুষের সাথে যোগাযোগ রেখে একাধিক কর্মসূচি নিয়ে চলেছে রাজ্যের পদ্ম শিবির।
এছাড়া রাজ্যের শাসক দলের তূল্যমূল্য সমালোচনা করাই নয় একবারে পথে নেমে আমজনতার সাথে ও আমজনতার স্বার্থে কাজ করার চেষ্টা করছে পদ্ম দলের নেতা কর্মীরা। করোনা বা আমফান মোকাবিলায় রাজ্য সরকারে বিরুদ্ধে যে জনমত তৈরি হয়েছে তাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা চালাচ্ছে পদ্মনেতারা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন এক্ষেত্রে তারা অনেকটাই সফল। কারণ আমফানে বিধ্বস্ত রাজ্যবাসীর সরকার বিরোধী ক্ষোভ চরমে পৌঁছেছে। তার সাথে তৃণমূলের গোষ্ঠী কন্দোলও বার বার প্রকাশ্যে চলে আসায় দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। ফলে এই সব ইস্যুগুলিকে নিয়েই যে বিজেপি ২১ এর নির্বাচনে ঝাঁপাতে চলেছে তার আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন দেখার অমিত শাহের নেতৃত্বে বঙ্গ বিজেপি কোন কোন পথ বাছে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে।