আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২৯ মে: বাঁকুড়া ডিস্ট্রিক্ট প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে বিশ্ববরেণ্য সাংবাদিক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের ১৬০তম জন্মদিনটি সাংবাদিক দিবস হিসেবে পালিত হলো বাঁকুড়ায়। এদিন সকালে পোদ্দার পাড়া মোড়ে এবং রামানন্দ স্মৃতি ভবনের সামনে প্রতিষ্ঠিত ভারতীয় সাংবাদিকতার অগ্রপথিক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের মূর্তিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানান ডিস্ট্রিক্ট প্রেস ক্লাবের সভাপতি সুনীল দাস, সম্পাদক সন্তোষ ভট্টাচার্য, স্থানীয় কাউন্সিলর ভ্রমর চৌধুরী, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ অমিতাভ চট্টরাজ, অনুশীলন সমিতির সম্পাদক প্রদীপ নাগ, নিখিল বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনের জেলা সভাপতি সমীর দাস এবং জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সাংবাদিকরা। পরে সকলে পদযাত্রা সহকারে পাঠকপাড়ায় রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের জন্মভিটায় গিয়ে পুষ্পার্ঘ নিবেদন করে শ্রদ্ধা জানান। অনুষ্ঠানে দেশাত্মবোধক সঙ্গীত পরিবেশন করেন মল্লিকা মুখোপাধ্যায়।
এক সংক্ষিপ্ত সভায় দিনটির তাৎপর্য আলোচনা করতে গিয়ে প্রেস ক্লাবের সম্পাদক সন্তোষ ভট্টাচার্য বলেন যে, বিগত ত্রিশ বছর ধরে এই দিনটি জেলায় সাংবাদিক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। পার্শ্ববর্তী কয়েকটি জেলায় সাংবাদিকরাও সাংবাদিক দিবস হিসেবে এই দিনটি পালন করেন। তিনি বলেন, আমরা সাধারণ ভাবে “প্রবাসী” ও “মডার্ন রিভিউ” এর সম্পাদক হিসেবেই রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়কে জানি। কিন্তু একজন মেধাবী ছাত্র, ছাত্র বৎসল শিক্ষক, মানবদরদী সমাজ সংস্কারক হিসেবে তাঁর যে কর্মকাণ্ড তা নিয়ে চর্চা হয় না। তাই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অকৃত্রিম সুহৃদ, আধুনিক ভারতীয় শিল্পকলার প্রচারক রামানন্দকে নিয়ে নিরন্তর চর্চা ও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে রামানন্দের সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতার আদর্শ মেনে চলা খুব জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, বর্তমানে মেনস্ট্রিম মিডিয়ার পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু সংবাদের সত্যতা যাচাই না করে সংবাদ পরিবেশনের যে প্রবণতা সংবাদমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে তা একেবারেই কাম্য নয়। অনেক সময় অসত্য সংবাদ পরিবেশনের ফলে সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। অনেক সময় সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমের পরিচালকরা রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ভয় ভীতির থেকে রক্ষা পেতে নানা কৌশল গ্রহণ করেন সংবাদ পরিবেশনে। শাসকের বিরুদ্ধে যায় এমন কোন সত্য সংবাদ দেশের শাসকদের পছন্দ নয়। বৃটিশ আমল থেকে অদ্যাবধি সেই ট্র্যাডিশন চলে আসছে। রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের আদর্শ মেনে এই পরিস্থিতিতে সকল সাংবাদিকদের একজোট হওয়ার কথা বলেন তিনি। রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিন সারা দেশে সাংবাদিক দিবস পালনের দাবির সাথে সাথে তাঁর নামাঙ্কিত একটি ডাকটিকিট প্রকাশেরও দাবি জানানো হয়।