পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের পদ ছাড়লেন বীরভূমের প্রবীণ তৃণমূল নেতা, যোগ দিতে পারেন বিজেপিতে

আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ১৪ ডিসেম্বর: পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের পদ ছাড়লেন কাজল সাহা নামে এক প্রবীণ তৃণমূল নেতা। দলীয় বিধায়ক তথা দলের বীরভূমের ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের সভাপতি অভিজিৎ রায়ের বিরুদ্ধে একনায়কতন্ত্রের অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেন তিনি। সব ঠিকঠাক থাকলে ২০ ডিসেম্বর দলবল নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন কাজলবাবু।

রাজনৈতিক জীবনে জন্মলগ্ন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক ছিলেন ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের ঝিকড্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের লোহাজং গ্রামের বাসিন্দা কাজল সাহা। ছাত্রাবস্থায় ছাত্র পরিষদ। এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে যুব কংগ্রেসের ঝিকড্ডা অঞ্চল সভাপতি। সে সময় ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের যুব সভাপতি ছিলেন প্রয়াত আভাস রায়। ১৯৯৮ সালে তৃণমূল গঠন হওয়ার দিন থেকে মমতার সঙ্গী ছিলেন কাজল সাহা। ওই বছরই পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচনে দাঁড়িয়ে জয়ী হন। ২০০৮ সালে নির্বাচিত হয়ে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হন পাঁচ বছরের জন্য। ২০১৩ সাল থেকে এখনো পর্যন্ত তিনি ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ। দলীয় বিধায়ক, ব্লক সভাপতি অভিজিৎ রায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে সোমবার তিনি পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। পদত্যাগ পত্র জমা দেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও বিডিওর কাছে।

কাজলবাবু বলেন, “এখানে নামেই পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ। কিন্তু কোনও কাজ করতে দেওয়া হয় না। কাজ করতে না পারলে পদে থেকে লাভ নেই। কারণ অভিজিৎবাবুই শেষ কথা। তাই দেখলাম শুধু শুধু পদ আঁকড়ে ধরে রেখে লাভ নেই। পদত্যাগ করলাম”। তিনি আরও বলে, “একসময় সিপিএমের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে তৃণমূলকে প্রতিষ্ঠিত করেছি। আমার বিরুদ্ধে ৪০ টি মামলা ঝুলছে। এমনকি সিপিএম খুনের মামলা দেওয়ায় যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে। এখন নতুনরা এসে দলে মাতব্বরি করছে। তবে এখনো দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করিনি।” পিকের দল পরিচালনা নিয়েও নিজের অসন্তোষের কথা প্রকাশ করেছেন তিনি। মুখে না বললেও তাঁর ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, আগামী ২০ ডিসেম্বর অমিত শাহ’র শান্তিনিকেতন সফরের দিন বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন তিনি।

এনিয়ে অভিজিৎবাবু বলেন, “উনি মিথ্যা কথা বলছেন। উন্নয়নের প্রতিটি মিটিংয়ে উনি উপস্থিত থাকতেন। আসলে উনি ‘দাদার অনুগামী’ পোস্টার সাঁটাচ্ছিলেন। ধরা পড়ে যাওয়ায় এখন মিথ্যা কথা বলছেন। আমি বিষয়টি দলের জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছি।”

বিজেপির জেলা নেতা মানস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি যতদূর জানি কাজলবাবু এলাকার প্রবীণ তৃণমূল নেতা। সিপিএমের সঙ্গে লড়াই করে দলকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কিন্তু এখন তিনি গুরুত্ব পাচ্ছিলেন না। তাকে কাজ করতে দেওয়া হয় না। কারণ তৃণমূল একটাই পোস্ট, বাকি সব ল্যাম্প পোস্ট। তাই তিনি হয়তো পদত্যাগ করেছেন। উনি যদি বিজেপিতে আসতে চান তাহলে স্বাগত জানাব। আমাদের দরজা খোলা।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *