আমাদের ভারত, মেদিনীপুর, ২৯ মার্চ: লকডাউনে সবথেকে বেশী সমস্যায় পড়েছেন জেলার প্রান্তিক ও ভবঘুরে সম্প্রদায়ের মানুষজন। তাদের মুখে দু’বেলা দুমুঠো অন্ন তুলে দিতে পুলিশ ও প্রশাসনের পাশাপাশি এগিয়ে এল বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এগিয়ে এসেছে বিভিন্ন মন্দির ও মসজিদ কমিটি। কেউ ব্যক্তিগতভাবে তো কেউ কেউ সমষ্টিগতভাবে এগিয়ে এসেছেন অভুক্ত মানুষগুলির মুখে দু’বেলা দুমুঠো অন্ন তুলে দিতে। দিন রাত এক করে ভবঘুরে ও প্রান্তিক মানুষদের খাবার দিচ্ছেন তারা। কেউ রুটি তরকারি তুলে দিচ্ছেন তো কেউ ভাত তরকারী। কেউ এগিয়ে এসেছেন মুড়ি, বিষ্কুট, পাঁউরুটি ইত্যাদি শুকনো খাবার নিয়ে। সকলের একটাই উদ্দেশ্য যত বেশী সম্ভব মানুষজনের পাশে দাঁড়ানো।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি এগিয়ে আসায় কিছুটা হলেও কাজ হালকা হয়েছে পুলিশ ও প্রশাসনের। লকডাউনের জন্য সমস্যায় পড়া অন্যান্য বিষয়গুলির উপর বাড়তি নজর দিতে পারছে তারা।
গত চারদিন ধরে মেদিনীপুরের নজরগঞ্জ এলাকার বিমলা মাতার মন্দির কমিটির কর্মকর্তা গোপাল সাহার নেতৃত্বে কমিটির সদস্যরা রান্না করা খাবার নিয়ে মেদিনীপুর স্টেশনে ভবঘুরেদের মধ্যে তা বিলি করে চলেছেন। স্টেশন চত্বরে এদিক ওদিকের অলিতে গলিতে প্রচুর ভিখারী ও ভবঘুরে আছেন। বাসে ও ট্রেনে ভিক্ষা করাই তাদের পেশা। গোপালবাবু বলেছেন, ওই মানুষগুলির দুর্দশা দেখে কষ্ট হচ্ছিল। তাই এই ব্যবস্থা।
একইভাবে “তারা মা মন্দির কমিটি” ও স্বামী বিবেকানন্দ ভাবাদর্শ প্রচার সমিতির পক্ষ থেকে শহরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের দুঃস্থ তিন শতাধিক পরিবারকে পরিবারপিছু তিন কেজি চাল ও দুই কেজি করে আলু দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে গরিব ও দুঃস্থ মানুষদের সাহায্যার্থে ব্যক্তিগতভাবে এগিয়ে এসেছেন গোয়ালতোড়ের শিক্ষিকা বিপাশা হংস। তিনি শনিবার প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে গোয়ালতোড়, কাদোশোল, শাঁখাভাঙা প্রভৃতি গ্রামের কয়েকটি অসহায় পরিবারে চাল, ডাল, আলু, তেলমশলা, শুকনো খাবার পৌঁছে দিয়েছেন।
শুধু বিপাশাদেবীই নন, এরকম ছোট ছোট সাহায্যে এগিয়ে আসছেন অনেকেই। মেদিনীপুরের দুই নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলার শনিবার প্রায় এক হাজার পরিবারকে দুই কেজি চাল ও এক কেজি আলু দিয়েছেন। মেদিনীপুরের আরেক সমাজসেবী সদানন্দ সরকারও সঙ্গীদের নিয়ে খাবার দাবার প্যাকেট করে সাইকেলে বেরিয়ে পড়েছেন দুঃস্থদের কাছে পৌঁছে দিতে।