পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, ঝাড়গ্রাম, ২২ মার্চ: ১৮টি হাতির একটি দল নষ্ট করে দিল জমির ধান। এর জেরে চাষিদের মাথায় হাত। প্রায় দশদিন ধরে জামবনী এলাকায় তাণ্ডব চালিয়ে বিঘার পর বিঘা জমির ধান নষ্ট করেছে হাতির দলটি।
গত ১২ মার্চ থেকে এই দলটি জামবনী রেঞ্জের চিচিড়া বিটের বিভিন্ন এলাকার জমিতে তাণ্ডব চালাচ্ছে বলে চাষিদের অভিযোগ। নদীর পাড়ে রাত জেগে পাহারা দিয়েও ধান রক্ষা করতে পারছেন না চাষিরা। ঝাড়খণ্ড সীমানার কাছে দেব নদীর ওপারে ফুলবেড়িয়া জঙ্গল থেকে হুলা পার্টি হাতির এই দলটিকে নদী পার করে মালবাঁধি জঙ্গলে নিয়ে এলে ফের ঝাড়খণ্ডের হুলা পার্টি তাদের জামবনীর দিকে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ঝাড়গ্রামের ডিএফও পঙ্কজ সূর্যবংশী।
ধানজমির উপর দিয়ে লাগাতার হাতির দলের যাতায়াতের ফলে মালবাঁধি, পড়শুলি সহ বিভিন্ন গ্রামের বেশ কয়েকজন চাষির জমির ধান পা দিয়ে ও খেয়ে নষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ।
এই নিয়ে মালবাঁধি গ্রামের চাষি তুষার মাহাত বলেন, আমার দেড় বিঘা, প্রতিবেশী সুভাষ পাল, গোপাল আইচ সহ অনেকেরই জমির ধান পা দিয়ে তছনছ করে দিয়েছে এই হাতির দলটি। পড়শুলি গ্রামের সুবোধ মাহাত সহ ওই গ্রামের অনেক চাষির মাথায় হাত পড়েছে। আমরা সন্ধ্যা ঘনালেই নদীর পাড়ে সবাই রাত জেগে থাকি। জমির ধান সবে ফুটছে, যদি কিছু রক্ষা করা যায়। বিঘা প্রতি চাষে খরচ হয়েছে প্রায় দশ হাজার টাকা। প্রায় দু’ বছর হল হাতির হানায় নষ্ট হওয়া ফসলের কোনও ক্ষতিপূরণ আমাদের এলাকার চাষিরা পাননি। ফলে নতুন করে আবেদন অনেকেই জানাননি। জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি।
পড়শুলি গ্রামের এক চাষি বলেন, ধানের ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখতে বনবিভাগের লোকজন এসেছিল। তারা শুধু রিপোর্ট নিয়ে যায়। এখনও কোনও ক্ষতিপূরণ পাইনি।
অন্যদিকে, গত ১৯ মার্চ গভীর রাতে লালগড়ের দিক থেকে কংসাবতী নদী পেরিয়ে ২৩টি হাতির একটি বড় দল ফের মানিকপাড়া রেঞ্জের রামরামা জঙ্গলে প্রবেশ করেছে। ফলে সীমান্তবর্তী জামবনী এলাকার ফুলবেড়িয়া জঙ্গল সংলগ্ন বিভিন্ন গ্রাম সহ রামরামা জঙ্গল এলাকার গ্রামবাসীদের সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছে বন বিভাগ।
এই নিয়ে ঝাড়গ্রামের ডিএফও পঙ্কজ সূর্যবংশী বলেন, দেড়-দু’ মাস আগে ঝাড়খণ্ড বনবিভাগের সঙ্গে হাতির ফ্রি মুভমেন্টের জন্য আলোচনা হয়েছিল। আমাকে ভালো করে খোঁজ নিতে হবে হাতির দলটিকে ঝাড়খণ্ডের বনবিভাগের থেকে আটক করা হচ্ছে, নাকি সাধারণ গ্রামবাসীরা আটক করছেন। কেননা বনবিভাগ থেকে আটক করার কথা নয়, যে সমস্ত চাষিরা দু’-আড়াই বছর ক্ষতিপূরণ পাননি বলে অভিযোগ করছেন তাঁরা আলাদা করে আমাদের কাছে আবেদন জানালে তাঁদের বিষয়টি কোন জায়গায় আটকে আছে তা আমরা খতিয়ে দেখে বলতে পারব। চাষিদের ক্ষতিপূরণের টাকা আটকে থাকার কথা নয়।