রাজ্যজুড়ে গোপাষ্টমী পালন করল ভারতীয় কিষাণ সংঘ

মিলন খামারিয়া
আমাদের ভারত, ১ নভেম্বর:
গোপাষ্টমী বা গোষ্ঠাষ্টমী– ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রথম গোষ্ঠে যাত্রা বা গোচারণ যাত্রা। গোপাষ্টমী সম্বন্ধে কূর্মপুরাণে বলা হয়েছে – কার্তিক মাসের শুক্লাষ্টমী ‘গোপাষ্টমী’ নামে প্রসিদ্ধ। এদিন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ প্রথম গোচারণে যান। এদিন যারা গাভীদের অর্চণ করবে, তাদের ভোজন করাবে, প্রদিক্ষণ করবে ও অনুগমন করবে তাদের সমস্ত মনস্কামনা পূর্ণ হবে।

শ্রীমদ্ভাগবতের দশম স্কন্ধের একাদশ অধ্যায়ে বলা হয়েছে যে, গোকূলে অসুরদের আক্রমণে অতিষ্ট হয়ে গোপেরা নন্দ মহারাজের ভাই উপানন্দের পরামর্শে বৃন্দাবন গমন করেন। যেহেতু বৃন্দাবন তৃণ-গুল্মে পরিপূর্ণ ও সুসজ্জিত ছিল এবং এর নিকটেই গোবর্ধন পর্বত বিদ্যমান ছিল তাই তারা বৃন্দাবন যেতে মনস্ত করলেন। এর কিছুদিন পরেই কৃষ্ণ-বলরাম ও অন্যান্য গোপ বালকেরা গোচারণের দায়িত্ব পান। যে বিশেষ তিথিতে নন্দ মহারাজ ও জ্যেষ্ঠ গোপেরা তাদের গোচারণের দায়িত্ব অর্পণ করেন, সেটি ছিল দামোদর মাসের শুক্লাষ্টমী তিথি, যেটি ‘গোপাষ্টমী’ নামে বিখ্যাত।

এই পূণ্য তিথিকে গুরুত্ব দিয়ে ভারতীয় কিষাণ সংঘের পশ্চিমবঙ্গ প্রান্তের পক্ষ থেকে আজ সারা রাজ্যব্যাপী ‘গোপাষ্টমী’ পালন করার আহ্বান জানানো হয়েছিল।এই তিথির মাহাত্ম্য কীর্তন করার জন্য গত ৩৩/১০/২২ তারিখ ওয়েবিনার আয়োজন করা হয়েছিল কিষাণ সংঘের পক্ষ থেকে। সেখানে বক্তব্য রাখেন প্রান্তের সহ-সভাপতি আশিস সরকার।

আজ সারা রাজ্য জুড়েই গোপাষ্টমী পালিত হয়েছে।বিশেষ করে বীরভূম, নদিয়া, উত্তর২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগণা পূর্ব বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, শিলিগুড়ি, কালিম্পং, মালদা, জলপাইগুড়ি, হাওড়া জেলাতে বেশ ধুমধাম করে পালিত হয়েছে। এদিন গো-মাতাকে স্নান করিয়ে তার মাথায় তেল-সিঁদুর, গলায় মালা ও শঙ্খধ্বনি সহযোগে আরতি করে এবং অন্যান্য পূজোপকরণ সহকারে সুখাদ্য খাইয়ে পুজো করা হয়।

এদিন শিলিগুড়ি জেলার গো-মাতা পূজনে অংশ নেন ভারতীয় কিষাণ সংঘের পূর্ব ও উত্তর–পূর্ব ক্ষেত্রের সংগঠন সম্পাদক শ্রীনিবাস ও পশ্চিমবঙ্গ প্রান্তের সংগঠন সম্পাদক অনিল চন্দ্র রায়। রীতিমতো ব্রাহ্মণ ডেকে বিভিন্ন উপাচার সহযোগে পুজো করা হয়।

আজকে রাজ্যব্যাপী গোপাষ্টমী পালনের গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে প্রান্ত সভাপতি কল্যাণ কুমার মন্ডল জানান, “পবিত্র বেদে যে ‘সাত মাতা’র কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে গো-মাতা অন্যতম। গো-মাতার দুধ খেয়েই আমরা সবাই বড়ো হয়েছি। তার থেকে পাওয়া ‘পঞ্চগব্য’ (দুধ, ঘি, দই, গোবর, গোমূত্র) আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অত্যাবশকীয় উপাদান। গোবর ও গোমূত্র সার হিসেবে চাষের কাজে ব্যবহার করে জৈব কৃষিকে ফিরিয়ে আনতে হবে আমাদের। গো-মাতা পূজনের মাধ্যমে গো-রক্ষা ও গো-বৃদ্ধি করার পাশাপাশি হিন্দুদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার জন্যই ভারতীয় কিষাণ সংঘ তাদের পালনীয় দিনগুলোর মধ্যে গোপাষ্টমীকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। আজ রাজ্যজুড়ে গোপাষ্টমী পালিত হয়েছে বিক্ষিপ্তভাবে। আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি গ্রামে যাতে এই তিথিতে মানুষ গো-মাতার পুজো করেন,তার জন্য আমরা জনগণকে সচেতন করব এই তিথির মাহাত্ম্য জানিয়ে।”

‘মনেপ্রাণে হিন্দুত্ববাদী’দের কাছে অনুরোধ। আমাদের সাহায্য করুন। খুব আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে সাড়ে পাঁচ বছর ধরে বাংলায় একমাত্র আমরাই প্রতিদিন এই ধরণের খবর করছি। আমরা ২৫ জন রিপোর্টার এর সঙ্গে যুক্ত। 🙏
ব্যাঙ্ক একাউন্ট এবং ফোনপে কোড:
Axis Bank
Pradip Kumar Das
A/c. 917010053734837
IFSC. UTIB0002785
PhonePay. 9433792557
PhonePay code. pradipdas241@ybl

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *