রাজেন রায়, কলকাতা, ৪ ফেব্রুয়ারি: বিধানসভা নির্বাচনের আগেই জেলায় জেলায় উঠেছে দলবদলের গেরুয়া ঝড়। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই নির্বাচন কমিশন বিধানসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করতে পারে, এমন কথা উত্তরবঙ্গের জনসভা থেকে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে গেলে সরকারিভাবে আর কোনও অনুষ্ঠান করতে পারবেন না মুখ্যমন্ত্রী। সেই কারণে এবার প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করাসহ বিভিন্ন জেলার রাজনৈতিক জমির মাপ বুঝে নিতে এবার পরপর জেলা সফর করছেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্ন সূত্রে খবর, ৯-১১ ফেব্রুয়ারি পূর্ব বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ এবং মালদা সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রতিটি জেলাতেই রাজনৈতিক জনসভা এবং সরকারি অনুষ্ঠান করবেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই জেলা সফরে যাওয়ার আগেই প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে ফেলতে পারে রাজ্যের শাসক দল। মুখ্যমন্ত্রীর এই ৩ দিনের জেলা সফর শেষ হলেই তার মতামত নিয়ে তা ঘোষণা করে দেওয়া হতে পারে। কোথাও প্রয়োজনীয় অদল বদল করার প্রয়োজন হলে তা মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি জানিয়েই করা হবে।
নবান্ন ও তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ৯ তারিখ মুখ্যমন্ত্রী প্রথমে যাবেন পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনায়। এখানে তাঁর একটি রাজনৈতিক সভা রয়েছে। সেই সভা শেষে তিনি যাবেন জেলা সদর বর্ধমান শহরে। সেখানে তিনি মাটিতীর্থ কৃষিকথা প্রাঙ্গণে চলতি বছরের মাটি উৎসব উদ্বোধন করবেন। দেশের মধ্যে প্রথম এখানেই সরকারি উদ্যোগে গড়ে উঠেছে কৃষিযন্ত্র চালনা ও পর্যবেক্ষণ এবং রক্ষণাবেক্ষণের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। তারও দ্বারোদ্ঘাটন করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর।
একইসঙ্গে সংলগ্ন কৃষি কলেজের নবনির্মিত ভবনেরও উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই দিন রাতে মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন বর্ধমান শহরেই। পরের দিন সকালে তিনি চলে যাবেন মুর্শিদাবাদ জেলায়। সেখানে তাঁর একটি রাজনৈতিক সভা থাকছে। সেই সভা সেরে মুখ্যমন্ত্রী চলে যাবেন মালদা জেলার ইংরেজবাজারে। সেখানে রাত্রে থেকে পরের দিন তিনি ওই জেলাতেই দলের একটি সভায় যোগ দেবেন।
পূর্ব বর্ধমান জেলায় ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল ভাল ফল করলেও ২০১৯ সালে জেলার বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রটি অবশ্য হাতছাড়া হয় রাজ্যের শাসক দলের। ২০১৬ সালে মালদা জেলা দখলে তৃণমূল ব্যর্থ হলেও মুর্শিদাবাদ জেলায় তৃণমূল ৪টি আসনে জয়ী হয়। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ জেলার ২টি লোকসভা আসনে জয়ী হয় তৃণমূল। এবার বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলবদলের ঝোড়ো হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর সরাসরি জনসভা এবং অনুষ্ঠান রাজনৈতিক জমি কতটা শক্ত করতে পারে সেদিকে চোখ থাকবে রাজনৈতিক মহলের।