তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়লেন ব্যারাকপুরের বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত, বিজেপিতে যোগ দানের জল্পনা তুঙ্গে

আমাদের ভারত, ব্যারাকপুর, ১৮ ডিসেম্বর: জল্পনা সত্যি হল। তিনি আগেই প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন তৃণমূলের টিকিটে ভোটে লড়বেন না, এবার তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করলেন ব্যারাকপুরের তৃণমূল বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভানেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে মেল ও চিঠি পাঠিয়ে, দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করলেন শীলভদ্রবাবু। শীলভদ্র দত্ত দল ছাড়ার বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাড়াও চিঠি দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিকে।

দল ছাড়লেও বিধায়ক পদ ছাড়েননি শীলভদ্র দত্ত। শীলভদ্র দত্তের ব্যারাকপুরের অফিসের চেহারা বদলে ফেলা হয়েছে। শীলভদ্র দত্তের অফিসে লাগানো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি, তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীক লাগানো ব্যানার সবই সরিয়ে ফেলা হয়েছে। পরিবর্তে অফিসে স্বামী বিবেকানন্দের ছবি দেওয়া ব্যানার লাগানো হয়েছে। রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা মেদিনীপুরে অমিত শাহের হাত ধরে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তিনিও যোগ দেবেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে।

দল ছাড়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ব্যারাকপুরের বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই দলের মধ্যে অসম্মানিত হচ্ছিলাম। গত ২/৩ দিন আগে থেকে ভীষণ ভাবে অসম্মানিত হয়েছি। দীর্ঘদিন ধরেই অসহনীয় অবস্থা চলছে। দল সবই জানে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত এখনো নিইনি। তবে বিধায়ক পদ ছাড়ছি না। সর্বভারতীয় সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে মেল করে ও চিঠি পাঠিয়ে দল ছাড়ার কথা জানিয়েছি। চিঠি পাঠিয়ে দল ছাড়ার বিষয়ে জানিয়েছি দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিকেও।

বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আমার মনে হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য আমি সঠিক ব্যাক্তি না। তবে বিধায়ক পদ ছাড়ার প্রসঙ্গে আমি আম জনতার সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব। কারন আমি জনতার ভোট জিতে আসা জনপ্রতিনিধি।” শীলভদ্র দত্তকে প্রশ্ন করা হয়, আপনি কি অমিত শাহের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন? জল্পনা চলছে রাজনৈতিক মহলে। তিনি জল্পনা উস্কে দিয়ে বলেন, “জল্পনা চলুক, জল্পনা চলতে ক্ষতি কি? তবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত এখনো নিইনি।”

আগেই শীলভদ্র দত্ত ঘোষণা করে ছিলেন তৃণমূলের টিকিটে ভোটে লড়বেন না। এবার তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করলেন তিনি। তবে তার বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনা প্রবল একথা বলাই যায়। বিজেপিতে যোগ দিলে তিনি ভোটেও লড়তে প্রস্তুত তা এক প্রকার তিনি তার অনুগামীদের স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন।

শীলভদ্র দত্ত দল ছড়ায় দলে কোনও প্রভাব পড়বে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। ব্যারাকপুরের বিধায়ক শীলভদ্র দত্তের শারীরিক অসুস্থতায় দলীয় সহকর্মীরা তাকে আর্থিক সহায়তা করেছিলেন। এই প্রসঙ্গে শীলভদ্র দত্ত বলেন, “যারা আমাকে আর্থিক সহায়তা করেছিলেন তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। যারা আমাকে সাহায্য করে ছিলেন, তারা চাইলে তাদের টাকা আমি তাদের ফেরত দিতে প্রস্তুত আছি। তবে রাজনীতির সঙ্গে এই প্রসঙ্গ জড়াবেন না। এই প্রসঙ্গ এখন ক্লোজড চ্যাপ্টার।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *