সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২৯ নভেম্বর: পুরনো শত্রুতার জেরে প্রতিবেশীকে নির্মমভাবে খুনের ঘটনায় শুক্রবার দুই অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছে বাঁকুড়া আদালত। গত ২.৭.২০১৮ ওন্দা থানার চূড়ামণিপুর গ্রামে খুন হন রবীন্দ্রনাথ মন্ডল(৬৫)। শুক্রবার বাঁকুড়া জেলা আদালতে মুখ্য জেলা দায়রা বিচারক দুই অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করে।
এ বিষয়ে বাঁকুড়া জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী অরুণ কুমার চ্যাটার্জি জানান যে, গত ২০১৮ সালের ২রা জুলাই পুরনো শত্রুতার জেরে খুন হন রবীন্দ্রনাথ মন্ডল। সেদিন তিনি তাঁর জমির কাজের জন্য লোক লাগিয়েছিলেন। তিনি তার জন্য মুড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময় ওই গ্রামেরই গোপাল মন্ডল এবং তার ছেলে সোমনাথ এবং রঘুনাথ কোদাল, কাটারি এবং বাঁশ নিয়ে রবীন্দ্রনাথ মন্ডলের ওপর হামলা করে। গ্রামেরই বাচ্চু সিং, সুশান্ত পাল ও কানাই বাগদি দূর থেকে এই ঘটনা দেখে চিৎকার করতে থাকেন। চিৎকার শুনে লোক জড়ো হয়ে যায়। এতে বেগতিক দেখে অভিযুক্তরা রবীন্দ্রনাথবাবুকে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। গ্রামের লোকজন তাকে বাউরিপাড়ায় নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে তাকে ওন্দা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
এই ঘটনার আগে একটা রাস্তা নিয়ে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে বিবাদ বাধে অভিযুক্তদের। অভিযুক্তরা সম্পর্কে তাঁর আত্মীয় হন। সেই সময় রবীন্দ্রনাথবাবু ওন্দা থানায় তাদের নামে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেই ঘটনায় রবীন্দ্রনাথবাবুর স্ত্রী করুণাময়ীদেবী এবং ছেলের রথীন বাড়ি ছাড়া ছিলেন। এই ঘটনার খবর পেয়ে সেদিনই তার স্ত্রী করুণাময়ীদেবী হাসপাতালে এসে দেখেন তার স্বামী মারা গেছে। বেলা একটা নাগাদ ওন্দা থানায় অভিযুক্তদের নামে তার স্বামীকে খুন করা হয়েছে বলে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ ঘটনার তদন্তে নামে। অভিযুক্তরা পালিয়ে যায় এবং পরে পুলিশের হাতে তারা একে একে ধরা পড়ে।এই মামলায় সাক্ষী ছিল মোট ২২ জন। ভারতীয় দন্ড বিধির ৩০২,৩৪ ধারায় মামলার রুজু হয়। মামলা চলাকালীন গোপাল মন্ডলের মৃত্যু হয়।সাক্ষীদের জবানবন্দি অনুসারে শুক্রবার জেলা মুখ্য দায়রা বিচারক মনোজ্যোতি ভট্টাচার্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। এই বিষয়ে সরকারি আইনজীবী অরুণ কুমার চ্যাটার্জি জানান, দোষীরা উপযুক্ত শাস্তি পেয়েছেন, তারা নৃশংসভাবে খুন করেছিল।