বৈশাখীর সম্মানের প্রশ্নে আপোসহীন শোভন! একসঙ্গে দেখা করলেন রাজ্যপালের সঙ্গে

রাজেন রায়, কলকাতা, ৪ ডিসেম্বর: একসময়ের রমরমা রাজনৈতিক কেরিয়ার তিনি ফেলে এসেছেন বহু যোজন পিছনে। রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে এখনো তার ডিভোর্সের মামলা চলছে। এমনকি বিজেপিতে যোগ দিলেও এখনও সক্রিয় ভূমিকা পাননি তিনি। তা সত্বেও আজও বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপরে ন্যূনতম আঁচ এলে তার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন শোভন চট্টোপাধ্যায়। বৈশাখীকে তার কলেজ থেকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে উৎখাতের চেষ্টা করা হচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে শুক্রবার বিকেলে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করলেন শোভন এবং বৈশাখী দুজনেই।

রাজভবনে ঘণ্টাখানেক বৈঠক করার পর বেরিয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায় নিজেই জানিয়েছেন, নিয়ম বহির্ভূতভাবে তার নিজের কলেজে বৈশাখীকে হেনস্থার অভিযোগে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেছেন। আল আমিন কলেজে বৈশাখী জুন মাসে ইস্তফা দেওয়ার পরেও তার চাকরি কেড়ে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কলেজ কারও অ্যাজেন্ডা পূরণের জায়গা নয়। সরকারের আত্মসমালোচনা করা উচিত। রাজ্যপাল সহানুভূতির সঙ্গে গোটা বিষয়টি শুনেছেন।

আর এত সবকিছু ফিরহাদ হাকিমের কলকাঠিতে হচ্ছে, তা সোজাসুজি বলে ফের সরাসরি ফিরহাদ হাকিমকে আক্রমণ করেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। এই নিয়ে বলেন, ‘বাঘ সব সময় বাঘ থাকে। তাকে জাগানোর চেষ্টা করবেন না। আমি চাকরিতে নিজের যোগ্যতায় ঢুকেছি উনি আমায় চাকরি দেননি। এখন ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কলেজের সামনে আন্দোলন করা হচ্ছে। আমি তো পদ ছেড়ে দিয়েছি, পোস্টারে কেন আমার নাম। পড়ুয়াদের কেন বিপথগামী করা হচ্ছে, তদন্ত হোক।’ তিনি আরও বলেন, ‘ফিরহাদ হাকিমের কী অধিকার আছে আমাকে উৎখাত করার? আমি জুন মাসে পদত্যাগ করা সত্ত্বেও সেই অচলাবস্থার দায় এখনও আমার উপর চাপানোর চেষ্টা হচ্ছে। ওই কলেজ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ এবং রাজ্যপাল পদাধিকার বলে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য, তাই তাঁকে গোটা বিষয়টি জানালাম।’ তিনি আরও দাবি করেন, যে হীন মন্তব্য ফিরহাদ হাকিম করেছেন, তা আমি মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি। ফিরহাদ হাকিমের উচিত বাংলার মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়া। ওনার নিজেরও তিনটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তাদের যদি আগামী দিনে কেউ উৎখাত করার কথা ভাবেন তাহলে ওনাকেও বাংলার মানুষের কাছে জবাব পেতে হবে।’

প্রসঙ্গত শোভন এবং বৈশাখী দীর্ঘদিন ধরেই বিজেপিতে থাকলেও তাদের এখনও সক্রিয় ভাবে কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি। বিজেপি শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে আগ্রহী হলেও বৈশাখীকে গুরুত্ব দিতে দলেরই একাংশ নারাজ থাকায় তাদের বিজেপিতে এখনো সক্রিয় ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি।
এর মধ্যেই শুভেন্দু অধিকারীর পরবর্তী রাজনৈতিক পদক্ষেপ নিয়ে জল্পনার মধ্যেই তৃণমূলের প্রাক্তন নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন বলেছেন, ‘ছোটবেলা থেকেই শুভেন্দুকে চিনি, শিশিরদাকে জানি। শুভেন্দু তাঁর মত নিজেই জানাবেন। প্রত্যেক রাজনৈতিক নেতার নিজের সম্মান রয়েছে। শুভেন্দু একজন পরীক্ষিত সৈনিক।’ এছাড়াও তিনি বলেছেন, একজন প্রকৃত বন্ধুর মত আপদে-বিপদে সবসময় বৈশাখীর পাশে তিনি থাকবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *