আমাদের ভারত, ৪ নভেম্বর: কানাডার একটি হিন্দু মন্দিরে ফের খালেস্তানিরা হামলা চালাল। এবার শুধু হিন্দু মন্দির ভাঙ্গচুর নয় সেখানে ভক্তদের ওপরেও হামলা চালিয়েছে খালিস্তানিরা বলে অভিযোগ উঠেছে। কানাডার ব্রামটনে রবিবার এই ঘটনা ঘটেছে। একই সঙ্গে ভারতের উপদূতাবাস আয়োজিত একটি শিবিরেও হামলা চালিয়েছে তারা। ওই মন্দিরের বাইরে ভারতীয় উপদূতাবাসের একটি শিবিরে ও হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। এই হামলার ঘটনার প্রতিবাদ করেছে নয়া দিল্লি। অন্যদিকে এই হামলার নিন্দা করে সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
রবিবার ব্রামটনে মন্দিরে পুজো দিতে হাজির হন বেশ কয়েকজন হিন্দু ভক্ত। সেই সময় ওই মন্দিরের সামনে ভারতে ১৯৮৪ সালের শিখ বিরোধী হিংসার প্রতিবাদে অবস্থানে বসেছিলেন খালিস্থানিপন্থী কয়েকজন। তাদের হাতে ছিল খালিস্তানী সংগঠনের পতাকা, লাঠি। অভিযোগ, ভক্তরা মন্দিরে ঢোকার সময় তাদের উপর চড়াও হয় খালিস্তানপন্থীরা। তাদের মারধরের হাত থেকে রেহাই পায়নি মহিলা – শিশুরাও।
এই ঘটনায় বিতর্ক শুরু হয়েছে সমাজ মাধ্যমে। চাপে পড়ে সমাজমাধ্যমে এই ঘটনার বিরুদ্ধে লিখেছেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো। তিনি লিখেছেন, হিন্দুসভা মন্দিরে হিংসার ঘটনা গ্রহণযোগ্য নয়। কানাডার প্রতিটি মানুষের অবাধ এবং নিরাপদে ধর্মাচরণ করার অধিকার রয়েছে। ঘটনা নিন্দা করেছেন কানাডার বিরোধী দলনেতাও।
অন্যদিকে, কানাডায় অবস্থিত ভারতীয়দের সুবিধা অসুবিধার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ওই মন্দিরের বাইরে শিবির খুলেছিল ভারতীয় উপ দূতাবাস। সেখানেও খালিস্তানীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ। হামলার ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই এই বিষয়ে সরব হয় নয়াদিল্লি। কানাডার ভারতীয় দূতাবাস শিবিরের যোগ দেওয়া ভারতীয়দের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
খালিস্থানপন্থী নেতা হার্দিক সিং নিজ্জরের হত্যার পর থেকে কানাডা–ভারতের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। নিজ্জরের হত্যায় ভারতের ভূমিকা রয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন ট্রুডো যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন দাবি করে হত্যায় দায় অস্বীকার করেছে নয়াদিল্লি। এই আবহে আবার গত মঙ্গলবার কানাডার উপবিদেশ মন্ত্রী ডেভিড মরিসনের মন্তব্য আগুনে ঘি ঢেলেছে। মার্কিন দৈনিক দ্যা ওয়াশিংটন পোস্টের একটি প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে, কানাডায় খালিস্থানী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ এবং তাদের উপর হামলা চালানোর ছাড়পত্র দিয়েছিলেন ভারতের এক শীর্ষ স্থানীয় আধিকারীক। সংবাদপত্রটিতে দাবি করা হয়েছে সেই পদাধিকারী নাকি অমিত শাহ। কানাডার একটি সূত্র তা নিশ্চিত করেছে বলে সংবাদপত্র দাবি করেছে। কানাডার উপ বিদেশ মন্ত্রী মরিশন মঙ্গলবার স্বীকার করেন সেই সূত্র। এ বিষয় প্রকাশ্যে আসার পরেই শোরগোল পড়ে যায়। শাহের বিরুদ্ধে কানাডার মন্ত্রীর মন্তব্য নিন্দা করেছে ভারত। কড়া ভাষায় স্পষ্ট জানানো হয়েছে, এই ধরণের বক্তব্য অযৌক্তিক এবং সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।