বারাসতের কাজিপাড়ায় মতুয়া ভক্তদের উপরে হামলা, আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের

সুশান্ত ঘোষ, বনগাঁ, ১ এপ্রিল: ঠাকুরনগরে মতুয়া মেলায় যোগ দিতে যাওয়ায় পথে বারাসতে মতুয়া ভক্তদের বাসে হামলা চালানোর অভিযোগ। বাস থেকে নামিয়ে ভক্তদের বেধড়ক মারধর করে। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ মতুয়া মহাসঙ্ঘের সভাধিপতি এবং কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। ২৪ ঘন্টার মধ্যে অভিযুক্তরা গ্রেফতার না হলে মতুয়ারা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

জানাগেছে, এই হামলায় সুমন হালদার ও মতুয়া সম্প্রদায়ের দলপতি বিধান হালদার আহত হয়েছেন। আক্রান্ত সুমন ও বিধানকে আহত অবস্থায় প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় বারাসত জেলা হাসপাতালে। সুমনের আঘাত গুরুতর হওয়ায়, সেখান থেকে তাঁকে কলকাতার একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। অন্যজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।

গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ মতুয়া মহাসঙ্ঘের সভাধিপতি এবং কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। ইতিমধ্যেই মতুয়া শিষ্যদের উপর হামলার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে বারাসত থানার পুলিশ। ঘটনার সঙ্গে আর কেউ যুক্ত আছে নাকি সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্ত চালাচ্ছে বারাসাত থানার পুলিশ।

অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার গড়িয়ার নরেন্দ্রপুর থেকে মতুয়াভক্তদের একটি বাস রওনা দিয়েছিল ঠাকুরবাড়ির বারুনি মেলায় যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে। বাসে মহিলা এবং পুরুষ মিলিয়ে প্রায় চল্লিশ জন ছিলেন। এই দলের সঙ্গেই ছিলেন মতুয়াদের দলপতি বিধান হালদার। অভিযোগ, বাসটি বারাসত কাজিপাড়ায় আসতেই কয়েক দুষ্কৃতীর পথ আটকায়। এরপর বাসের মধ্যে থাকা মহিলাদের উদ্দেশ্যে শুরু হয় কটূক্তি, অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ। এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন সুমন হালদার এবং বিধান হালদার। তখনই দুষ্কৃতীরা তাঁদের উপর হামলা চালায়।

অভিযোগ, প্রথমে বিধানের মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়। এরপর, সুমন ও বিধানকে বাস থেকে নামিয়ে পাশের একটি অন্ধকার জায়গায় তুলে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। সেখানে বেধড়ক মারধর করে ফেলে রেখে যায় ওই দু’জনকে। পরে গোঙানির আওয়াজ পেয়ে মতুয়াদের কয়েকজন সেখান থেকে উদ্ধার করে তাঁদের। মারধরে সুমনের মাথা, নাক এবং চোখের নিচের অংশ মারাত্মকভাবে জখম হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় দু’জনকেই নিয়ে যাওয়া হয় বারাসত জেলা হাসপাতালে।

মতুয়াদের উপর আক্রমণের প্রতিবাদে হাবরা স্টেশনে রেল অবরোধ করে মতুয়া ভক্তরা। তবে বেলা বাড়তেই কয়েকজন পরীক্ষার্থীর অনুরোধে অবরোধ তুলে নেয় মতুয়া সমর্থকরা। জানা যায়, বনগাঁ লোকালে কয়েকজন পরীক্ষার্থী ছিল যারা চাকরির পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিলেন। ট্রেন থেকে নেমে এসে তাঁরা মতুয়াদের অনুরোধ করেন। পরবর্তীতে আরপিএফ এসে অবরোধ তুলে দেয়।

এই ঘটনার পর বৃহস্পতিবার মতুয়া মহাসঙ্ঘের সভাধিপতি এবং কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরকে জানান ভক্তরা। ঘটনার কথা শুনে ক্ষোভ উগড়েদেন সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। তিনি বলেন, রাজ্যে কোনও নিরাপত্তা নেই। মতুয়া ধর্মের উপরে যারা আঘাত এনেছে তারা কারা, পুলিশ ভাল করেই যানে। কাজী পাড়ার মতো এলাকায় এতো বড় ঘটনা ঘটে গেলেও পুলিশ নির্বিকার। ২৪ ঘন্টার মধ্যে অভিযুক্তরা গ্রেফতার না হলে মতুয়ারা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে বলে জানান শান্তনু ঠাকুর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *