আমাদের ভারত, ২৪ মার্চ: লোকসভা ভোট ঘোষণার আগেই কার্যকর হয়েছে সিএএ। আর এর প্রভাব ভালো মতোই বাংলার নির্বাচনে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। এই আবহে বাংলাদেশ থেকে আসা বাংলাভাষী মুসলিমদের বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ বন্ধ, দুয়ের বেশি সন্তান না নেওয়ার শর্তের কথা ঘোষণা করলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। অসমের মুখ্যমন্ত্রীর এই হুংকারে তুমুল আলোড়ন পড়েছে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে। শর্ত না মানলে বাংলাভাষী মুসলিমদের অসমের মূল ভূ-খণ্ডের বাসিন্দা হিসেবে মেনে নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ থেকে আসা বাংলাভাষী মুসলিমরা অসমিয়া হিসেবেই পরিচিত হতে অসমের মুখ্যমন্ত্রী বেশ কিছু শর্ত দিয়েছেন। তাদের অসমের মূল ভূ-খণ্ডে থাকার জন্য বিশেষ শর্ত তাদের মানতে হবে। নিজেদের অসম অধিবাসী হিসেবে দেখতে হলে অসমীয়া সমাজের সাংস্কৃতিক নিয়ম ও ঐতিহ্য পালন করতে হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এই ঘোষণার পর থেকেই বাংলাদেশ থেকে আসা মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ আশঙ্কায় রয়েছেন। হেমন্ত বিশ্বশর্মার একাধিক শর্ত নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। একটি পরিবারে দুটির বেশি সন্তান থাকলে অসমের মূল ভূ- খণ্ডের বাসিন্দা হওয়ার যোগ্যতা হারাবেন বাংলাদেশ থেকে আসা মুসলিমরা। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, বহুবিবাহ প্রথা বন্ধ, নাবালিকা বিয়ে দেওয়া যাবে না। সন্তানকে মাদ্রাসায় পড়ানো যাবে না। তাদের শিক্ষিত করে ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ার তৈরি করুন। মেয়েদের স্কুলে পাঠান। পৈত্রিক সম্পত্তির ওপর মেয়েদেরও অধিকার আছে। অসমের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য গ্রহণ করুন। অসমের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য যদি গ্রহণ করেন তবেই এই ভূ-খণ্ডের মূল নিবাসী হওয়ার ছাড়পত্র দেওয়া হবে।
মুসলিমরা বাল্যবিবাহ এবং নাবালিকা বিবাহকে সমর্থন না করলেও দুটির বেশি সন্তান হলে মূল নিবাসী তকমা হারানো নিয়ে শঙ্কিত। জম্মু-কাশ্মীরের পর অসম মুসলিমদের জনসংখ্যার নিরিখে দ্বিতীয়। ২০১১ সালের জনগণনার নিরিখে অসমের জনসংখ্যার মোট ৩৪ শতাংশ মুসলিম। তাতে দুটি ভাগ আছে। এক বাংলাদেশ থেকে আসা বাংলাভাষী মুসলিম। দুই অসমীয়া ভাষায় কথা বলা অসমের মুসলিম। ২০২২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে অসম মন্ত্রীসভা ৪০ লাখ অসমীয়া ভাষী মুসলিমকে স্বদেশী অসমীয়া মুসলিম হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এরা রাজ্যের মুসলিম জনসংখ্যার ৩৭ শতাংশ, বাকি ৬৩% বাংলাভাষী।