স্বরূপ দত্ত, উত্তর দিনাজপুর, ২৪ ডিসেম্বর: রায়গঞ্জ শহরের প্রসার ও জনসংখ্যা এবং ব্যস্ততা বেড়েই চলেছে ক্রমশ। পরিবর্তন হয়েছে আর্থ সামাজিক পরিকাঠামোর। রায়গঞ্জ শহরে যানবাহনের সংখ্যা ক্রমশ বাড়লেও শহরে তৈরী হয়নি পার্কিং জোন। কুমড়োর ফালির মতো একমুখী শহর হওয়ার কারনে চরম সমস্যায় রাজপথ থেকে অন্যান্য রাস্তার দুধারে থাকা দোকানদাররা। রায়গঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকায় পার্কিং জোন তৈরির দাবি জানিয়েছেন রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন। রায়গঞ্জ পুরসভার দাবি, পাকিং জোন তৈরীর জন্য জায়গা খোঁজা হচ্ছে। যত্রতত্র যানবাহন না রাখার জন্য সাধারন মানুষকে আবেদন করার পাশাপাশি সচেতন করা হচ্ছে।
আজ থেকে ১৮ বছর আগে ১৯৯২ সালের ১ এপ্রিল পশ্চিম দিনাজপুর জেলা ভেঙে উত্তর ও দক্ষিন দিনাজপুর জেলা গঠিত হয়। উত্তর দিনাজপুর জেলার সদর হয় রায়গঞ্জ। জেলা সদর হওয়ার কারনে রায়গঞ্জ শহরের আর্থ সামাজিক পরিকাঠামোর দ্রুত পরিবর্তন ঘটতে থাকে। দ্রুত বাড়তে থাকে জনসংখ্যাও। আর জনসংখ্যার সাথে সাথে ব্যাবসা বানিজ্য ও যানবাহনের সংখ্যা। জেলা ভাগের পর থেকেই রায়গঞ্জ শহরের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ শুরু হয়। শিলিগুড়ি মোড় থেকে কসবা মোড় পর্যন্ত নেতাজী সুভাষ রোড, মহাত্মা গান্ধী রোড, বিধান সরনী সহ একাধিক রাজপথ ঘিরে রায়গঞ্জ শহর। জেলার অন্যান্য ব্লক ও গ্রামগঞ্জ থেকে হাজার হাজার মানুষ আসেন রায়গঞ্জ শহরে। বাসিন্দাদের কেনাকাটা করতে শহরে আসতে হয়। সাধারন মানুষ টু হুইলার এবং ফোর হুইলার নিয়ে কেনাকাটা করতে এলে গাড়ি রাখা নিয়ে চরম সমস্যায় পড়েন।
রায়গঞ্জ শহরের রাস্তাঘাটও খুব চওড়া নয়। দুচাকার মোটরবাইক এবং চার চাকার যানবাহন নিয়ে আসা ব্যক্তিরা তাদের গাড়ি রাস্তার ধারে দোকানের সামনে রেখেই কেনাকাটা করতে বাধ্য হয়। দোকানের সামনে গাড়ি কিংবা টু হুইলার রেখে যাওয়ায় পুলিশ প্রশাসন এবং ব্যবসায়ীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। রাস্তার ধারে গাড়ি পার্কিং করায় পথ চলতি মানুষও সমস্যায় পড়েন। গাড়ি চালক এবং টু হুইলার মালিকদের দাবি শহরে পাকিং জোন না থাকার কারনেই তাদের রাস্তার ধারে গাড়ি রাখতে হচ্ছে। শহরে পার্কিং জোন না থাকায় এক্ষেত্রে তাদের অন্য কোনও উপায়ও নেই।
ব্যবসায়ীদের সংগঠন রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন রায়গঞ্জ শহরে নেতাজী সুভাষ রোডে এবং মহাত্মা গান্ধী রোডে পার্কিং জোন নির্মানের দাবি তুলেছে। সাধারন মানুষ থেকে যানবাহন চালকরা জানিয়েছেন, একমুখী শহরে পার্কিং জোন না থাকার কারনে ক্রেতাদের দোকানের সামনে গাড়ি বা টু হুইলার রাখতে হয়। দোকানের সামনে গাড়ি বা টু হুইলার রেখে দোকানে গেলে পথ চলতি মানুষের স্বাভাবিক যাতায়াত বিঘ্নিত হয়। পুর প্রশাসনের কাছে তাদের দাবি, রায়গঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকায় পার্কিং জোন না হলে এই সমস্যা মিটবে না। রায়গঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান সন্দীপ বিশ্বাস জানিয়েছেন, রায়গঞ্জ শহরে পার্কিং জোন তৈরীর জন্য জমি খোঁজা হচ্ছে। গাড়ি রাখার ক্ষেত্রে সাধারন মানুষকে সচেতন হবার জন্য তিনি অনুরোধ করেন।