জামিন হল না অনুব্রত মণ্ডলের, ফের জেল হেফাজত

আমাদের ভারত, ২৪ আগস্ট:
অসুস্থতার যুক্তি টিকল না আদালতে। আসানসোলে বিশেষ সিবিআই আদালতে খারিজ হয়ে গেল অনুব্রতর জামিনের আবেদন। বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী তাকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর ফের তাকে আদালতে তোলা হবে। অনুব্রত মণ্ডলকে রাখা হবে আসানসোল জেলে।

চারদিন সিবিআই হেফাজত শেষে বুধবার আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হয় অনুব্রত মণ্ডলকে। চূড়ান্ত শারীরিক অসুস্থতা রয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের। সেই কারণ দেখিয়েই আরোও একবার তার জামিনের আবেদন করেছিলেন আইনজীবী। আদালতে তিনি বলেন, অনুব্রত মণ্ডল শারীরিকভাবে অসুস্থ তাই তাকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করানোর সুযোগ দেওয়া হোক। যে কোনও মুহূর্তে তার অক্সিজেন প্রয়োজন হতে পারে। জানা গেছে অনুব্রত মণ্ডল বিচারকের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি চেয়ে ছিলেন। হাত জোড় করে তিনি বিচারককে বলেন, হুমকি চিঠি কে দিল তা সিবিআই তদন্ত হোক। তাতে বিচারক বলেন, এই মামলার সঙ্গে হুমকির কোনও সম্পর্ক নেই। তাই কেউ এই বিষয়ে কথা বলবেন না।

অন্যদিকে সিবিআই আইনজীবী প্রভাবশালী তত্ত্বকেই তুলে ধরেন। অনুব্রতর জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে তার ১৪ দিনের জেল হেফাজতের আবেদন জানিয়েছিল সিবিআই। তদন্তকারী আধিকারিকরা জেলে গিয়ে অনুব্রতকে জেরা করার অনুমতি চান।

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী বলেন, গরু পাচার মামলায় তদন্তে অনেকের গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। সেখানে অনুব্রতর নাম বারবার উঠে এসেছে। তাকে ছেড়ে দিলে তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে।

কিন্তু অনুব্রতর আইনজীবী প্রভাবশালী তত্ত্ব খারিজ করেন। তিনি বিচারককে বলেন, সবাইকে প্রভাবশালী বলার চেষ্টা করছে সিবিআই। অনুব্রতকে হেফাজতে নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। অনুব্রতর আইনজীবীর যুক্তি, তার মক্কেল গরু পাচারের সঙ্গে কোনও ভাবে জড়িত নন। পশু হাট থেকে গরু কিনে সীমান্তে গরু পাচার করা হলে তার মক্কেলের কী দোষ? সীমান্তে গরু পাচার হলে তার দায় বিএসএফের। দায়িত্ব এড়াতে পারে না বিএসএফ। এখনো পর্যন্ত শুধু একজন বিএসএফ কমান্ডার গ্রেপ্তার হয়েছে আর কেউ নয়। তার মক্কেল সেফ প্যাসেজ করে দিতেন তার কোনও প্রমাণ নেই। তার মক্কেলকে টার্গেট করা হচ্ছে। এটা একটা টার্গেটেড ইনভেস্টিগেশন। শুধুমাত্র সন্দেহের বশেই হেফাজত চাইছে সিবিআই। উনি বহুল পরিচিত ব্যক্তি, মুখ্যমন্ত্রীও চেনেন, এটাই কি তার মক্কেলের দোষ? এফআইআরে অনুব্রতের নাম নেই। এনামুল হক ও সায়গল হোসেনের নাম রয়েছে। অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গলের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি পাওয়া গেছে। অনুব্রতর আইনজীবী বলেন, তার নামে কোনও বেনামী সম্পত্তি পেলে আয়কর দপ্তরে পেনাল্টি দেবেন তিনি।

এদিকে সিবিআই আইনজীবী জানান, অনুব্রতর নামে তারা প্রচুর সম্পত্তি খোঁজ পেয়েছেন। শুধু নিজের নয় আত্মীয়ের নামেও সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তদন্তে এতটুকু সাহায্য করছেন না অনুব্রত। উনি প্রভাবশালী, এটা কোনও টার্গেটেড ইনভেস্টিগেশন নয়। এটা কি প্রমাণ দিতে পারবেন যে এটা রাজনৈতিকভাবে করা হচ্ছে? গরু পাচার কোনো ছোটখাটো অপরাধ নয়। এনামুল এই চক্রের মাথা। এর থেকে অনুব্রত দেহরক্ষী টাকা নিত। এই টাকা অনুব্রত কাছে যেত। এটা একটা চেইন বিজনেস। অনেক ষড়যন্ত্রকারী রয়েছে।

ঘন্টাখানেক ধরে চলে সাওয়াল জবাব। বিচারক কিছুক্ষণ রায়দান স্থগিত রাখেন। পরে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন তিনি। তাকে আসানসোল জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *