আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, বোলপুর, ২৪ সেপ্টেম্বর: নিজের বাড়ির সামনে গাড়ি থামতেই অগুনিত ভক্তদের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়লেন অনুব্রত। প্রায় আড়াই বছর আগে ১১ আগস্ট কেন্দ্রীয় এজেন্সি সিবিআই’য়ের হাতে গ্রেফতার হন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তাদের কাছ থেকে আরেক কেন্দ্রীয় এজেন্সি ইডির হাতে গ্রেফতার হন। দুই কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাত থেকে এক এক করে জামিনে মুক্ত হন এই দোর্দণ্ড প্রতাপশালী নেতা অনুব্রত মণ্ডল। ঠোঁটের নিচে সেই পুরু চওড়া জোড়া গোঁফ। তবে শরীর ভেঙেছে অনেক। কিছুটা রোগাও হয়েছেন।
তিহার জেল থেকে ফ্লাইটে কলকাতায় এবং সেখান থেকে সকন্যা নিজ বাসভবনে ফেরেন তিনি। ফেরার পথে কর্মী সমর্থকদের ভিড়ে শক্তিগড় ও গুসকরায় তাঁর গাড়ি থামে দু’দুবার। মঙ্গলবার বোলপুরে নিচুপট্টির বাসভবনের সামনে আগে থেকেই কাতারে কাতারে মানুষ হাজির হন। অধীর অপেক্ষায় ছিলেন অনুগামীরা। দলীয় কার্যালয় যেখানে কাউকে এই কয় বছর দেখা যেত না, আজ সেখানে লোকারণ্য। গাড়ি থেকে নিজের বাড়ি দেখে আবেগে চোখের জল চেপে রাখতে পারেননি অনুব্রত। মেয়ে সুকন্যা জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে পাশে থেকে বলছেন, এভাবে কাঁদছো কেন? তখন চারিদিকে “কেষ্টদা জিন্দাবাদ। জয়বাংলা ধ্বনি”। কেষ্টদা সবাইকে জোড় হাত করে নমস্কার করে চলেছেন। সমাজ মাধ্যম থেকে দলীয় নেতা কর্মীদের মুখে একটাই শব্দবন্ধ- বীরভূমের বাঘ ফিরে আসছে।
এদিন অবশ্য সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অনুব্রত বলেন, আমি কোনো বিতর্কে যেতে চাই না। আদালতকে সম্মান করি। নিজের শরীর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কোমর ও পায়ে ব্যাথা। মমতা দিদিকে শারদ শুভেচ্ছা জানিয়ে স্নেহধন্য ভাই কেষ্ট বলেন, দিদি আমাকে ভালোবাসেন। আমি দিদিকে ভালোবাসি। দিদির জন্য আমি আছি।
মঙ্গলবার গীতাঞ্জলিতে প্রশাসনিক বৈঠক। সেখানে তাঁর উপস্থিত থাকা প্রসঙ্গে অনুব্রত বলেন, শরীর ভালো নেই। দিদি বললে যেতে হবে। নিজ বাসভবনের নীচে দলীয় কার্যালয়ে পুরনো চেয়ারে বসে কিছুক্ষণ যেন গুম মেরে গেলেন। সেখানে মেয়ে সুকন্যা, সুদীপ্ত ঘোষ, চন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুক্ষণ আলোচনা সারলেন। সেখানে আগে থেকেই হাজির ছিলেন অনুব্রতর প্রিয়পাত্র নলহাটির বিধায়ক রাজু সিং।
অন্যদিকে বাড়িতে অপেক্ষায় মামা গোপাল ঘোষ, মামিমা সহ অন্যান্য আত্মীয় পরিজনেরা। সবাই খুশিতে আত্মহারা। বীরের মতো ফুলের মালায় তাঁকে সবাই বরণ করে নিলেন।