আমাদের ভারত, জলপাইগুড়ি, ৪ জুলাই: আবার পর্বত শৃঙ্গ অভিযানে পাড়ি দিচ্ছে জলপাইগুড়ির নেচার অ্যান্ড ট্রেকার্স ক্লাব অফ জলপাইগুড়ি। এবারের লক্ষ্য হিমালয়ের মনিরাং পর্বত শৃঙ্গ। যার উচ্চতা ২১,৬২৫ ফুট। অভিযানে সময় লাগবে ২৪ দিনে। তবে পর্বতারোহীদের একটাই আক্ষেপ, আর্থিক ভাবে জনপ্রতিনিধি কিংবা কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসছেন না। সাহায্য পেলে আরও এগিয়ে যাওয়া সম্ভব বলে দাবি পর্বতারোহীদের।
এখনও পর্যন্ত জলপাইগুড়ি শহর থেকে দশটি পর্বত শৃঙ্গ অভিযান সংঘটিত করেছে ক্লাব। জলপাইগুড়ি থেকে আবার নয় জন পর্বতারোহীরা হিমালয়ের দুর্গম শৃঙ্গ অভিযানের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন ৫ অগস্ট। এবারের লক্ষ্য হিমাচল প্রদেশের অন্যতম দুর্গম শৃঙ্গ মনিরাং, যা লাহুল স্পিতি জেলার কাজা অঞ্চলে অবস্থিত। ২১,৬২৫ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট এই শৃঙ্গের পথ খুবই দুর্গম। পথের দুর্গমতার জন্য শৃঙ্গ পথে লাগাতে হবে প্রায় সাড়ে সাত থেকে আট হাজার ফুট দঁড়ি। এই দঁড়ি ধরেই শৃঙ্গের পথে এগিয়ে যাবে অভিযাত্রীরা। শৃঙ্গ পথে রয়েছে অজস্র আলগা পাথর, সেগুলি উপর থেকে অভিযাত্রীদের গায়ে পরার সম্ভাবনার সঙ্গে রয়েছে, অধিক উচ্চতা জনিত অসুস্থতা সহ কয়েকশো কিলোমিটার বেগে প্রচন্ড ঠান্ডা হাওয়ার সম্ভাবনা। সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এবারের অভিযানে ক্লাবের অভিজ্ঞ পর্বতারোহীরা ছাড়াও নতুন প্রতিভাবান পর্বতারোহীদের দলে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় পর্বতারোহণ সংগঠন অনুমোদিত দুর্গম এই অভিযানের জন্য দুই জন মহিলা সদস্য সহ নয় জনের একটি দল নির্বাচিত করা হয়েছে। নেতৃত্ব দিচ্ছেন অভিজ্ঞ পর্বতারোহী ভাস্কর দাস। অন্যান্য সদস্যরা হলেন অমিত দাস, জনক কোচ, সুজয় বনিক, পার্থ সারথী রায়, সৌম্যদীপ দাস, বিজয় চক্রবর্তী, বিশাখা শর্মা ও শম্পা সাহা।
৪ অগস্ট দেশের জাতীয় পতাকা এবং ক্লাব পতাকা তুলে দেওয়া হবে অভিযাত্রী দলের হাতে। ৫ আগস্ট দলটি জলপাইগুড়ি থেকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা হবে। সেখান থেকে মানালি হয়ে তারা ৯ আগস্ট পৌঁছাবে ‘মানে’ গ্রামে। যার উচ্চতা ১১৭০০ ফুট। এখানে দলের সঙ্গে যুক্ত হবেন স্থানীয় পাঁচ জন সহযোগী। সেখান থেকেই ১১ আগস্ট শুরু হবে হাঁটার পর্ব। ১৩৫০০ ফুট উচ্চতায় একটি ক্যাম্প করে মূল শিবির বা বেস ক্যম্প স্থাপন হবে ১২ অগস্ট প্রায় ১৫ হাজার ফুট উচ্চতায়। মূল শিবিরের উপরে বিভিন্ন উচ্চতাতে স্থাপিত হবে আরও তিনটি শিবির। আবহাওয়া ও বাকি সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০ অথবা ২১ অগস্ট, ২১৬২৫ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট এই দুর্গম শৃঙ্গ আরোহণের চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন অভিযাত্রী দলের নেতা ভাস্কর দাস। প্রচণ্ড বরফে ঠাণ্ডা হাওয়া, তুষারপাত এবং দুর্গম হিমবাহের অজস্র ফাটল অভিযাত্রীদের অতিক্রম করতে হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ভাস্কর দাস বলেন, “অভিযানের বাজেট প্রায় ছয় লক্ষ টাকা। মূলত ক্লাব এবং অভিযাত্রীদের নিজস্ব আর্থিক অনুদানের পরেও বাজেটের অঙ্কতে এখনও পৌঁছতে পারেননি তারা, তাই বিভিন্ন সংস্থা, ব্যক্তি ও স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের আর্থিক সহযোগিতার জন্য ক্লাবের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে।
উপস্থিত ছিলেন ক্লাব সভাপতি প্রদোষ কুসুম দাস সংস্থার বরিষ্ঠ সদস্য দেবাশীষ লালা ও সৌরেন সেন সহ অনেকে।