সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ১১ মার্চ: ফের এক কর্মরত ঠিকা শ্রমিকের মৃত্যুতে ডিভিসির মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র দিনভর শ্রমিক বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে। মৃতদেহ ফেলে রেখে বিকেল পর্যন্ত শ্রমিকরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এতে বিদ্যুৎ প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ ব্যাহত হতে থাকে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, মৃত শ্রমিকের নাম তাপস রায় (৪৭)। বাড়ি বড়জোড়া থানার সাবকগ্রাম।তিনি কারখানা সংলগ্ন লাগাপাড়া গ্রামে ভাড়া বাড়িতে দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন। বিদ্যুৎ প্রকল্পের এক ঠিকা কর্মী উজ্জ্বল ঢাং বলেন, বিদ্যুৎ প্রকল্পের কোল হ্যান্ডলিং প্ল্যান্ট (সিএইচপি) সংস্থায় কাজ করতেন তাপস। কোল ক্রাশার মেশিনের কনভেয়ার বেল্ট ফেটে গিয়েছিল। সেই অংশ জোড়া লাগানোর কাজ করছিলেন তাপস। কাজ করতে করতে তিনি কোনোভাবে কনভেয়ার বেল্টের সাথে জড়িয়ে যান। তিনি এমনভাবে জড়িয়ে যান যে তার সহকর্মীরা তাকে ছাড়াতে এসে দেখে তাপসের মাথার অংশ পিষে গেছে। এরপরই শ্রমিকরা ওই ঠিকা সংস্থার শ্রমিক সুরক্ষা নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। শ্রমিকদের অভিযোগ, সেই সময় তাপস সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছিল কি না তা ঠিকাদারের সাইট ইনচার্জ দেখেননি কেন। তাদের উদাসীনতার কারণেই এক সপ্তাহের মধ্যে ২ জন শ্রমিকের মৃত্যু হল।
এবিষয়ে ডিভিসির স্থায়ী কর্মী সংগঠনের সিটু নেতা সমীর বাইন বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে ২ জনের মৃত্যুর ঘটনাকে লঘু করে দেখলে চলবে না। যে সংস্থার কর্মী ছিল তাপস তাদের গাফিলতি না থাকলে এই ভাবে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে না। এটা গভীর উদ্বেগের বিষয়।
আইএনটিইউসি নেতা অরিন্দম ব্যানার্জির অভিযোগ, গত ৪ মার্চ ৫৩তম জাতীয় সুরক্ষা সপ্তাহ উদযাপন শুরু হয়েছে। এমটিপিএসেও মহাসমারোহে সুরক্ষা নিয়ে সচেতনতা প্রচার চলছে। গত ৫ মার্চ লিফটে কাজ করতে গিয়ে মৃত্যু হল সত্যনারায়ণ বোস নামে এক ঠিকা শ্রমিকের। সোমবার সুরক্ষা সপ্তাহের শেষদিন আরেক শ্রমিকের মৃত্যু কেন ঘটল এর জবাবদিহি করতে হবে ঠিকা সংস্থাকেই। মৃতের পরিবারের হাতে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি করেছেন সমীর বাইন ও অরিন্দম ব্যানার্জি।
এদিকে সন্ধে পর্যন্ত মৃতদেহ ঘিরে বিক্ষোভ চলে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, মৃতের পরিবারের ১ জনকে চাকরি ও ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি না পেলে মৃতদেহ তুলতে দেওয়া হবে না।