আমাদের ভারত, বালুরঘাট, ১৫ জানুয়ারি: স্থানীয়দের দাবিকে প্রাধান্য দিয়ে ৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে তপনে শুরু হল দিঘি সংস্কারের কাজ। ইকো পার্কের আদলে সেজে উঠবে দিঘি বললেন মন্ত্রী। কর্মসংস্থান নিয়ে আশায় বুক বাঁধছে স্থানীয়রা। প্রায় ২ হাজার বছরের প্রাচীন দিঘি নতুন ভাবে সাজিয়ে তোলার এমন উদ্যোগে রাজ্য সরকারের প্রশংসায় বাসিন্দারা। বুধবার এলাকায় বুড়ি পুজোর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে দিঘি সংস্কারের কাজে হাত লাগান দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থা। রাজ্য মৎস্য দপ্তরের বরাদ্দকৃত ৩৭ কোটি টাকা ব্যায়ে দিঘি সংস্কারের কাজ করবে রাজ্য সরকার। এদিন আনুষ্ঠানিক ভাবে নারকেল ফাটিয়ে কাজের সূচনা করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা। উপস্থিত ছিলেন তপনের বিডিও ছোগেল মোক্তান তামাং, পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তাপস মন্ডল সহ অনান্য প্রশাসনিক আধিকারিকরা। দখল হয়ে যাওয়া সমস্ত জায়গাই উদ্ধার করে আগষ্টেই নতুন মাত্রা পাবে তপন দিঘি, বললেন বিডিও।
তপনের বিডিও ছোগেল মোক্তান তামাং জানিয়েছেন, ৮৩ একর জায়গায় তপন দিঘি থাকলেও বর্তমানে এই দিঘির অনেক অংশ মজে গিয়েছে। একই সাথে কিছু বাসিন্দা অবৈধ ভাবে দিঘির জায়গা দখল করে নিয়েছেন। যেগুলি আইনি পথে পুনুরুদ্ধার করা হবে। পাশাপাশি চলতি বছরের আগষ্টেই এই কাজ সম্পন্ন করবার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে কাজে নিযুক্ত ঠিকাদারকে।
ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রায় দুই বছর আগে ৮৩ একর জায়গায় অবস্থিত তপন দিঘি সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দ করে রাজ্য সরকার। তারপর অবশ্য টেন্ডার জটিলতায় সংস্কারের কাজ থমকে থাকে। অবশেষে মেদিনীপুরের এক ঠিকাদার সংস্থা ওই কাজের দায়িত্ব নিতেই চটজলদি প্রক্রিয়ায় শুরু হয় দিঘি সংস্কারের কাজ। কথিত আছে বহু প্রাচীন এই তপন দিঘিতে কোনও কাজ শুরু করতে হলে প্রথমে দিঘির পাড়ে বুড়ি পুজো দিতে হয়। সেই বিশ্বাসকে মান্যতা দিয়ে এদিন কাজ শুরুর আগে বুড়ি পুজো দেওয়া হয়েছে ঠিকাদার সংস্থার তরফে।
এলাকার বাসিন্দা সুব্রত ধর জানিয়েছেন, বহু প্রাচীন রীতি অনুসারে এই দিঘিতে নতুন কোনও কাজ শুরুর আগে বুড়ি পুজোর রীতি প্রচলিত আছে। যে কারণেই এদিন পুজো দিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে।
এলাকার বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে নিয়ে রাজ্য সরকার এই কাজে হাত বাড়িয়েছে। এখানে শুধু দিঘির সংস্কারই হবে না একই সাথে বাউন্ডারি ওয়াল, দিঘির মাঝখান দিয়ে রাস্তা, সহ কলকাতার ইকোপার্কের আদলে সাজানো হবে তপন দিঘি।
তপন দিঘি সুরক্ষা সমিতির তরফে দাবি করা হয়েছে, এই দিঘি সংস্কার হলে আগামীতে মাছ চাষের পাশাপাশি আরও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা খুলে যাবে জেলার বাসিন্দাদের কাছে। যা থেকে জেলার মানুষ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।