সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ৩১ জুলাই: জেলার অন্যতম বৃহৎ গ্রাম পঞ্চায়েত বড়জোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে দুর্নীতি, স্বজন পোষণ টাকা নয়ছয়ের প্রতিবাদে পঞ্চায়েত অফিসের প্রধান দরজায় বসে ধর্না অবস্থান করেন বিজেপি সদস্যরা।
বড়জোড়া পঞ্চায়েতের গ্রাম সংসদের সংখ্যা হল ৩০। তার মধ্যে বিরোধী বিজেপির সদস্য সংখ্যা ১১। বিজেপির অবস্থানকে পঞ্চায়েত প্রধান সোমা মন্ডল বলেন, বিজেপি সদস্যরা দায়িত্বজ্ঞান হীনতার পরিচয় দিলেন দরজা আটকে রেখে। কারণ বহু উপভোক্তা এদিন পরিষেবা পেতে হয়রানির শিকার হয়েছেন। এটা জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে কাম্য নয়। পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা গোবিন্দ ঘোষের অভিযোগ, দামোদর নদের মানাচর এলাকার বাসিন্দারা ভাঙ্গাচোরা রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রধান সব জেনেও রাস্তা মেরামতির কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না। বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলের প্রত্যেকটি নিকাশি নালা মজে গেছে। বর্ষার আগেই এগুলি পরিষ্কার করে সংস্কার করার কথা ছিল, কিন্তু তা না হওয়ায় মানুষের সমস্যা হচ্ছে, কিন্তু সেদিকে নজর নেই পঞ্চায়েত প্রশাসনের।
গোবিন্দবাবুর অভিযোগ, উপভোক্তারা পরিষেবা পাক বা না পাক সংশ্লিষ্ট সকলের নজর দামোদর নদের বালি ঘাটগুলির দিকে। মোরাম খাদান, কয়লা খনি, ও বিভিন্ন কারখানাগুলির দিকে। এই সব জায়গাগুলি থেকে পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিলে এনওসি বাবদ লাখ লাখ টাকা জমা হয়। সেই সবের হিসাব দেওয়া হয় না। কারখানায় নিজেদের লোক নিয়োগ করা নিয়েই ব্যস্ত থাকেন পঞ্চায়েত প্রধান থেকে বিধায়ক বলে দাবি করেন বিজেপির যুব নেতা সোমনাথ কর। তিনি বলেন, অবিলম্বে পথবাতি লাগাতে হবে, রাস্তা ও নিকাশি নালা সংস্কার এবং পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিলের হিসাব দিতে হবে। এই মর্মে তারা ৬ দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি জমা করেন পঞ্চায়েত প্রধানকে।
বিজেপির এই বিক্ষোভ প্রসঙ্গে বড়জোড়ার বিধায়ক অলক মুখার্জি বলেন, পঞ্চায়েতের বিরোধী সদস্যরা নিজেদের হাসির পাত্র করে তুলেছেন। ওদের পঞ্চায়েত সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই। তাই এসব মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন। চ্যালেঞ্জ করছি, দম থাকলে প্রমাণ করুন কোথায় দুর্নীতি হয়েছে।
পঞ্চায়েত প্রধান সোমা মন্ডল বলেন, এতবড় এলাকা। প্রচুর কাজ হচ্ছে। মানাচরের রাস্তা সারাই ও নিকাশি নালা সংস্কারের জন্য টেন্ডার ডাকা হবে। তিনি বিজেপি নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা দরজা আটকে রেখে চিল্লামিল্লি না করে যে কোনো দিন অফিসে বসে ওই ফান্ডের হিসাব নিয়ে যেতে পারেন। এই আশ্বাস পাওয়ার পর বিজেপি সদস্যরা বিক্ষোভ অবস্থান প্রত্যাহার করেন।