ছাত্রী নিগ্রহে অভিযুক্ত অধ্যাপকের শাস্তির দাবিতে সরব প্রাক্তনীরা

আমাদের ভারত, মেদিনীপুর, ২৮ ফেব্রুয়ারি: বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক পরেশ চন্দ্র জানার বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে কু-প্রস্তাব দেওয়া, রাজি না হলে সাপ্লিমেন্টারি পাইয়ে দেওয়ার ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ওই অধ্যাপককে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া এবং ছাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে লাগাতার আন্দোলন চলছে। পদার্থবিদ্যার পাশাপাশি এই আন্দোলনে সামিল হয়েছেন সমস্ত বিভাগের সহস্রাধিক ছাত্রছাত্রী।

এই আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়ে শুক্রবার পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তনীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল করে উপাচার্যকে ডেপুটেশন দেয়। শুভব্রত রথ, তনুশ্রী সাহা, দ্বীপ চক্রবর্তী, অরিজিত পাল, জাভেদ, বিপ্লব গরাই প্রমুখের নেতৃত্বে এদিন অশোকনগর থেকে মিছিল করে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছায় এবং  অবিলম্বে অভিযুক্ত অধ্যাপককে বরখাস্ত সহ উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার এবং আগামীদিনে ছাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবি জানায়। শুভব্রত রথ বলেন, ‘আমাদের সময়েও ওই অধ্যাপক ছাত্রীদের সঙ্গে একই ব্যবহার করেছেন। কোনও ছাত্রী তাঁর বিরুদ্ধচারণ করলেই তাকে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দিতেন। ভয়ে তখন কিছু বলতে পারিনি’।

তনুশ্রী সাহা বলেন ‘আমাকেও তিনি বারবার কু-প্রস্তাব দিয়েছেন, অশ্লীল আচারণ করতেন, আমি পাত্তা না দেওয়াও আজ পর্যন্ত আমাকে পাশ করতে দেয়নি!’ প্রাক্তনীরা জানান, সাংবাদ মাধ্যমে খবরটা দেখেই তাঁরা নড়েচড়ে বসেন। নিজেদের মধ্যে ফোনে এই বিষয়ে আলোচনা হয়। তাঁরা বলেন, “যে কাজ আমরা করতে পারিনি সেই কাজ আমাদের জুনিয়ররা করতে পেরেছে। এই আন্দোলনকে আমরা সাধুবাদ জানাই”। অরিজিৎ পাল, বিপ্লব গড়াই, দ্বীপ চক্রবর্তী, জাভেদরা বলেন, “অভিযুক্ত অধ্যাপক স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের উপর রাজনৈতিক রঙ চড়িয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক সংগঠন(ভুটা)’র  কাছে নাটক করে তাকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে পার পেয়ে যাওয়ার চেস্টা করছেন জানতে পেরে আমরা আর স্থির থাকতে পারিনি। তাই নিজেদের বিবেকের তাড়নায় আমরা জুনিয়রদের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্যেই আজকের এই প্রতিবাদের আয়োজন করেছি।”

এক বাক্যে তাঁরা স্বীকার করছেন এই ঘটনার শিকার তাঁরাও  হয়েছে। তাঁদের আরো অভিযোগ, সবার সামনেই উনি হুমকি দিতেন ফেল করানোর, উনার বিরাগভাজন ছাত্র ছাত্রীদের ফেল করিয়েছেন, তনুশ্রী সাহাকে  বার বার ০ দিয়ে সাপ্লিমেন্টারি দেওয়ার জন্য ফাইনাল সেমিস্টারে এর ২ বছর পরেও ডিগ্রি কমপ্লিট করতে পারেনি!

বিগত দিনের রেজাল্ট খতিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে পদার্থবিদ্যা বিভাগেই সাপ্লিমেন্টারি পাওয়ার হার সবচেয়ে বেশি এবং তা উনার পেপার গুলিতেই!

এদিন তাঁরা বিভিন্ন ছাত্রীর সাথে অভিযুক্ত ওই অধ্যাপকের কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তার স্ক্রিনশট নিয়েও মিছিল করেন। প্রয়োজনে তাঁরা সাংবাদমাধ্যমকেও সেগুলি দিতে পারে বলে জানিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *